সৌভিক মজুমদার, ঝিলম করঞ্জাই ও আশিস বাগচী, কলকাতা : বেনামি আবেদনের মামলায় রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। শুনানির সময় তিনি মন্তব্য করেন, আমি প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে বলব, তৃণমূলের লোগো প্রত্যাহার করার জন্য। এই নিয়ে কড়া আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূলও (TMC)। চলছে রাজনৈতিক তরজা।


"আমি নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনে বলব তৃণমূল কংগ্রেসের লোগো প্রত্যাহার করার জন্য ! দল হিসাবে তাদের মান্যতা প্রত্যাহার করতে বলব নির্বাচন কমিশনকে! সংবিধান নিয়ে যা ইচ্ছা করা যায় না।" বেআইনি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে শুক্রবার এমনই মন্তব্য করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরপরই সাংবাদিক বৈঠকে করে তীব্র আক্রমণ শানান কুণাল ঘোষ।


আক্রমণ তৃণমূলের-


তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলেন, "বিচারকের চেয়ারের প্রোটেকশন নিয়ে কেউ যদি বলেন আমার দলকে তুলে দেবেন, মুখপাত্র হিসেবে তাঁকে কি আমি রসগোল্লা খাওয়াব নাকি ? স্ট্রিট কর্নার নয়, মনে রাখুন আদালতে বসে আছেন আপনি। এগুলো বলার জন্য আপনার যা ক্ষমতা আছে আপনি করে নিন।"


এপ্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "অসভ্যদের পার্টি। এই পার্টিকে কোনওভাবেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাখা এমনিতেই উচিত নয়।" 


তৃণমূল সাংসদ ও আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, "যদি তৃণমূল কংগ্রেসের রিকগনাইজেশন থাকবে কি থাকবে না ইস্যু হতো রিট পিটিশনে, তবে উনি কী বিচার বা রায় দিতেন, সেটা তাঁর ব্যাপার হতো। সেটা তৃণমূল কংগ্রেসও বুঝে নিত।"


এবিষয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "ওরা যখন পছন্দ হয় না রাজ্যপালকে গালাগালি দেন, মানুষকে তো দেন-ই, পুলিশকে দেন, বিচারক সে আর বাদ থাকবে কেন !"


সামগ্রিক এই ইস্যু নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, "সংবিধানে যে কোনও সংস্থা সেটা কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার হতে পারে, তার ভূমিকা পর্যালোচনা করার দায়িত্ব সংবিধান হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যস্ত করেছে। কোনও রাজনৈতিক দল সংবিধানের স্পিরিটকে অমান্য করছে, কোনও রাজনৈতিক দলকে যদি দেখা যায় সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে দুর্নীতির মতো অভিযোগে অভিযুক্ত হচ্ছে, তবে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ার আছে, সেই দলের ভূমিকা পর্যালোচনা করার। সংবিধান অনুসারে সেই দল চলছে কি না সেটা পর্যালোচনা করার।"


এই চাপানউতোরের জল এরপর কোনদিকে গড়াবে? সেদিকেই এখন সবার নজর।