কলকাতা: 'আজগুবি নয়, আজগুবি নয়, সত্যিকারের কথা, ছায়ার সাথে কুস্তি করে গাত্রে হল ব্যথা!' সুকুমার রায় (Sukumar Roy) তাঁর 'ছায়াবাজি' কবিতায় লিখেছিলেন এই পংক্তি। রবিবার রাস্তায় নেমে তা প্রত্যক্ষ করা গেল গেল। রোদের সঙ্গে যুদ্ধ করেও দেখা গেল না ছায়া। বরং কিছু ক্ষণের জন্য উধাও হয়ে গেল (Zero Shadow Day)।
কয়েক মুহূর্তের জন্য হলেও ছায়াশূন্য হল কলকাতা
এ দিন এমনই বিরল মুহূর্তের সাক্ষী থাকল শহর কলকাতা (Kolkata News)। কারণ রবিবার জিরো শ্যাডো ডে অর্থাৎ ছায়াশূন্য দিবস। পৃথিবীতে কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখার মধ্যে বসবাসকারী মানুষ, বছরে দু’ বার জিরো শ্যাডো ডে উপভোগ করতে পারেন।
এই ছায়াশূন্য দিবসের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হল, ভৌগলিক অবস্থানের নিরিখে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন দিনে ঠিক দুপুরবেলা সূর্য একেবারে মাথার ওপর আসে কয়েক মুহূর্তের জন্য। এর ফলে কোনও বস্তু বা ব্যক্তির ছায়া পড়লেও, তা দেখা যায় না। কারণ সূর্যের অবস্থান অনুযায়ী মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকা ব্য়ক্তির ছায়া উল্লম্ব ভাবে তাঁরই পায়ে নীচে হারিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: Zero Shadow Day: মাথার উপর গনগনে সূর্য, তাও ছায়াশূন্য হল কলকাতা, কারণ কী!
কলকাতার নিরিখে আজ ৫ জুন এই জিরো শ্যাডো ডে বা ছায়াশূন্য দিবস। বেলা ১১টা ৩৪ মিনিটে কয়েক মুহূর্তের জন্য উধাও হয়ে গেল ছায়া। আবার জুলাই মাসের ৭ তারিখে এমন অভিজ্ঞতার সাক্ষী হবেন বাংলার মানুষ। সেদিনও দুপুরবেলা কিছুক্ষণের জন্য কোনও বস্তু বা ব্যক্তির ছায়া উধাও হয়ে যাবে।
বছরে দু'বার ছায়াশূন্য এই অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়
এই ঘটনাটি ঘটে যেহেতু পৃথিবী যে অক্ষের ওপর ভর করে সূর্যের চারদিকে ঘুরছে ও যে অক্ষের ওপর নিজের চারদিকে ২৪ ঘণ্টায় পাক খাচ্ছে, এই দুটি অক্ষ পরস্পরের থেকে সাড়ে ২৩ ডিগ্রি হেলানো বলে। ২২ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে মকরক্রান্তি রেখা থেকে আস্তে আস্তে প্রতিদিন সূর্য ঠিক মাথার ওপর আসে দুপুরবেলা। একে সূর্যের উত্তরায়ণ বলে। ২০ বা ২১ জুন থেকে শুরু হয় সূর্যের দক্ষিণায়ন। সেইদিন থেকে কর্কটক্রান্তি রেখার দক্ষিণ দিকে ধীরে ধীরে সূর্য একেকটি জায়গায় দুপুরবেলা মাথার উপর আসে কিছুক্ষণের জন্য। তাই উত্তরায়ণের একটি দিন ও দক্ষিণায়নের একটি দিন জিরো শ্যাডো ডে বলে পরিচিত।