সমীরণ পাল, মধ্যমগ্রাম: ট্রলি ব্যাগে দেহকাণ্ডে একের পর এক তথ্যে চাঞ্চল্য। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে সোমবার নয়, রবিবার বিকেলে খুন হয়েছিলেন সুমিতা ঘোষ। কেন এই খুন করেছিল মা-মেয়ে আরতি ও ফাল্গুনী ঘোষ তা এখনও স্পষ্ট নয়।
দেহ ট্রলিব্যাগের ভিতরে ঢুকিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম থেকে কুমোরটুলিতে এনে গঙ্গায় ফেলতে গিয়ে হাতে-নাতে ধরা পড়ে মা-মেয়ে। মধ্যমগ্রামের বাড়ি থেকে পিসি শাশুড়ির দেহ নিয়ে সাইকেল ভ্যানে চেপে বারাসাত দোলতলা মোড়ে এসেছিলেন মা-মেয়ে আরতি ও ফাল্গুনী ঘোষ। ভ্যান চালক জানিয়েছেন, গতকাল সকালে তিনি যখন গীতশ্রী ভাণ্ডারের মোড়ে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন এক ব্যক্তি তাঁকে বলেন, ট্রলি ব্যাগ নিয়ে দুই মহিলা অপেক্ষা করছেন। কিন্তু ট্রলি ব্যাগ ভারী হওয়ায় সন্দেহ হয় ভ্যান চালকের। তাঁর কথায়, "ব্যাগটা ভারী ছিল। জিজ্ঞেস করলাম কী আছে। ওঁরা বললেন ব্যাগে কাঁসার বাসন আছে, তাই ভারী হয়েছে।'' এরপর ওই ভ্যানে চড়েই বাড়ি থেকে বারাসাত দোলতলা মোড়ে আসেন আরতি ও ফাল্গুনী। ঘটনার কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছেন ভ্যান চালক।
মধ্যমগ্রাম পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বীরেশ পল্লির এই একতলা বাড়িতে মাকে নিয়ে বছর তিনেক ধরে ভাড়া থাকতেন ফাল্গুনী। গতকাল ট্যাক্সি থেকে ট্রলিব্যাগ নামিয়ে টানতে টানতে গঙ্গার দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন দুই মহিলা। যা দেখে সন্দেহ স্থানীয়দের। স্থানীয়দের দাবি, কুমোরটুলি ঘাটের কাছে ট্যাক্সি থেকে নামেন মাস্ক পরা দুই মহিলা। গাড়ির ডিকি থেকে একটি ট্রলি ব্যাগ তাঁরা টেনে নিয়ে আসেন গঙ্গার ঘাটে। দুই মহিলাকে ওইভাবে ব্যাগ টানতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। জিজ্ঞাসা করায় মহিলারা জানান, পোষ্য কুকুর মারা যাওয়ায় তার দেহ ফেলতে এসেছেন। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় উত্তর বন্দর থানার পুলিশ।ট্রলি ব্যাগের তালা ভাঙতেই তার ভিতরে মেলে কাপড় জড়ানো এক মহিলার রক্তাক্ত দেহ। পরে জানা যায়, সন্দেহভাজন দুই মহিলার নাম আরতি ঘোষ ও ফাল্গুনী ঘোষ। সম্পর্কে মা-মেয়ে। নিহত সুমিতা ঘোষ আরতির মেয়ে ফাল্গুনীর পিসি শাশুড়ি। অসমের জোড়হাটের বাসিন্দা সুমিতা স্বামীর সঙ্গে থাকতেন না। অন্যদিকে, বনিবনা না হওয়ায় ফাল্গুনীও স্বামীর থেকে আলাদাই থাকতেন।
আরও পড়ুন: Panagarh News: পানাগড়কাণ্ডে অধরা অভিযুক্তরা, কোথায় গেলেন সাদা গাড়ির চালক? উঠছে প্রশ্ন