ঊজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা : বছর শুরুতেই বিস্ফোরক। সোমবার ২০২৪ এর পয়লা দিনে একের পর এক দলীয় বিষয়ে শাণিত মন্তব্য করলেন কুণাল।  তৃণমূলের অন্দরের 'নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব' থেকে শুরু করে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের হার, নিয়ে মন্তব্য করলেন তিনি। সরাসরি তৃণমূল নেতৃত্বের ঘাড়ে দোষ ঠেললেন বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হারের জন্য ! দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে কুণাল ঘোষের এই মন্তব্য় ঘিরে শোরগোল পড়ে গেছে। এই মন্তব্য়কে হাতিয়ার করে আক্রমণ শানাতে ছাড়েনি বিরোধীরা। 


কুণাল ঘোষের প্রশ্ন, 'মমতা ব্যানার্জির মতো মুখকে বিক্রি করতে পারেন না, জনতার দরবারে, মার্গো সাবান বিক্রি করতে গেছে। কারা ছিলেন নন্দীগ্রামের দায়িত্বে? তাঁদের হাতে রাজ্য় দল নিরাপদ?' তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসেই কার্যত বাগযুদ্ধে জড়িয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য় সভাপতি এবং রাজ্য় সাধারণ সম্পাদক! সুব্রত বক্সী যখন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে নিয়ে মুখ খুলে জল্পনা উস্কে দিয়েছেন তখন সেই মন্তব্য় নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন কুণাল ঘোষ।

আর সেই টানাপোড়েনেই ফের একবার উঠে এল নন্দীগ্রামের বিধানসভা ভোটের ফলের প্রসঙ্গ! তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে, আলোচলার কেন্দ্রে সেই নন্দীগ্রাম। যেখানে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে ভোটে হেরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ফল নিয়ে নাম না করে খোঁচা দিলেন কুণাল ঘোষ! বললেন, 'মমতা ব্যানার্জি তো তাঁদেরকে নন্দীগ্রাম ইলেকশন জিততে পাঠিয়েছিলেন, কারা ছিলেন ইলেকশনের দায়িত্বে? কেন মামলার উপর ডিপেন্ড করতে হচ্ছে। নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের মুখ ঘরে ঘরে রয়েছে সেখানে, সেই ইলেকশন করতে পারেননি। যা কারচুপি করুক শুভেন্দু অধিকারী, কেন তাঁরা পারেননি করতে? কারা ছিলেন দায়িত্বে? তাঁদের হাতে রাজ্য় দল নিরাপদ? হয় নাকি কখনও?'

একুশের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, পরাজিত হন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্য়ে অন্য়তম ছিলেন দলের রাজ্য় সভাপতি সুব্রত বক্সী। নন্দীগ্রামে পরাজয়ের বিষয়ে নাম না করে শীর্ষনেতৃত্বের একাংশকে নিশানা করেন কুণাল।  সব মিলিয়ে তৃণমূলের অন্দরে সংঘাতের পারদ যে চড়ছে, তা কার্যত স্পষ্ট।


তৃণমূলে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে বিতর্ক চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। বিভিন্ন নেতার কথায় যা বারবার সামনেও চলে এসেছে। বছরের প্রথম দিনে, তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসেও তার ব্য়তিক্রম হল না। আর এদিন এনিয়ে বাগযুদ্ধে জড়ালেন যাঁরা, তাঁর মধ্য়ে  একজন তৃণমূলের রাজ্য় সভাপতি। আরেকজন রাজ্য় সাধারণ সম্পাদক। সুব্রত বক্সী ও কুণাল ঘোষ। তাহলে কি প্রতিষ্ঠা দিবসেই আরও প্রকট হল তৃণমূলের বিভাজন?