প্রকাশ সিন্হা, কলকাতা: সারদা-কর্মীদের দায়ের করা মামলায় কুণাল ঘোষকে (Kunal Ghosh) অব্যাহতি। কুণালকে অব্যাহতি দিল বিধাননগরের এমপি-এমএলএ কোর্ট। বেতন ও এবং পিএফ না পাওয়ার অভিযোগে পার্ক স্ট্রিট থানায় মামলা করেছিলেন সারদা-কর্মীরা। তদন্তে নেমে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন এবং কুণালের নামে চার্জশিট দেয় পুলিশ। সেই মামলায় তৃণমূলের অধুনা রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র, কুণালকে অব্যাহতি দিল আদালত।


বিধাননগরে সাংসদ ও বিধায়কদের আদালতে সারদা-কর্মীদের দায়ের করা ওই মামলার শুনানি চলছিল। আদালতে সওয়াল-জবাব চলাকালীন কুণালের আইনজীবী জানান, কুণাল নিজেই সারদার কর্মী ছিলেন। তিনি নিজেও বেতন পাননি। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার কুণালকে অব্যাহতি দিল আদালত। ওই মামলায় কুণালের কোনও যোগ নেই বলে আদালতে সওয়াল করেন তাঁর আইনজীবী। (Saradha Case)


চিটফান্ড সংস্থা সারদার কর্মীদের বেতন এবং প্রভিডেন্ট সংক্রান্ত ওই মামলা। এমনিতে সারদা মামলার তদন্ত করছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI). কিন্তু পার্কস্ট্রিট থানায় সারদা-কর্মীদের দায়ের করা মামলা তদন্ত নিজের হাতে নেয়নি CBI. ফলে কলকাতা পুলিশের পার্কস্টির থানাই তদন্ত করছিল। তারা সুদীপ্ত এবং কুণাল দু'জনের নামেই চার্জশিট জমা দেয়। ৪০৬ এবং ৪০৯ ধারায় দু'জনকে অভিযুক্ত করে পুলিশ। 


আরও পড়ুন: WB Budget 2024: কর্মশ্রী থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে ভাতা বৃদ্ধি, রইল বাংলার বাজেটের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়


এই মামলায় আগেই নিজেকে দোষী বলে মেনে নেন সুদীপ্ত। তিনি কর্মীদের বেতন এবং প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা দিতে পারেননি বলে জানান আদালতে। কিন্তু কুণালকে এই মামলায় জড়ানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁর আইনজীবী। তিনি জানান, সারদা কর্তা সুদীপ্ত বেতন দিতে পারেননি, কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা করেননি। কুণাল নিজেই সারদার কর্মী ছিলেন। তিনিও প্রাপ্য পাননি। তাই কুণালের বেতন এবং প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা দেওয়ার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে, প্রশ্ন তোলেন তাঁর আইনজীবী।


পাশাপাশি, কুণালের আইনজীবী জানান, সুদীপ্ত সারদার ডিরেক্টর ছিলেন। কর্মীরা বেতন না পেলে, তাঁদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা না পড়লে, তার দায় অবশ্যই তাঁর ঘাড়ে বর্তায়। কুণালের বিরুদ্ধে ১২০ বি ধারাতেও মামলা ছিল। ২২৭ ধারার আওতায় কুণালকে বেকসুর খালাস করা হয়েছে। তিনি যেহেতু সারদার কর্মী ছিলেন, তাঁকে এই মামলায় যুক্ত করা যাবে না বলে জানায় আদালত। কুণালকে বেকসুর খালাস করা হয়। কুণালের বিরুদ্ধে ৪০৯ ধারা প্রযোজ্য নয় বলেও জানিয়ে দেন বিচারক।


এদিন রায় শোনাতে গিয়ে সাংসদ ও বিধায়কদের আদালতের বিচারক জয়গোপাল রায়। তিনি সুদীপ্তকেই দায়ী করেছেন কর্মীদের অপ্রাপ্তির জন্য। তাঁকে তিন বছরের সাজাও শোনায় আদালত। যদিও দীর্ঘ আট বছর পাঁচ মাস ধরে জেলেই বন্দি রয়েছেন সারদা কর্তা। ৪০৬ ধারায় সর্বোচ্চ তিন বছরের শাস্তির বিধান থাকলেও, তার বেশি সময় বন্দি রয়েছেন সুদীপ্ত। ফলে গিল্টি পিটিশন গ্রহণ করা হলেও, সুদীপ্ত মামলা থেকে মুক্ত বলে জানিয়েছে আদালত।