কলকাতা : সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের বিস্ফোরক কুণাল ঘোষ ( Kunal Ghosh ) । কাকে উদ্দেশ্য করে ইঙ্গিতপূর্ণ ট্যুইট করলেন তৃণমূল মুখপাত্র ? ট্যুইটের প্রতিটি লাইন সকলকেই মনে করাবে সাম্প্রতিক কালে বিশিষ্ট এক ব্যক্তির মন্তব্যের কথা। তিনি লেখেন, ‘‘যদি কেউ ‘মাথা’ চেনেন, ‘ধেড়ে ইঁদুর’ জানেন বলে ভাব দেখিয়ে প্রচার চান, তাঁকে অবিলম্বে সেই মামলায় সাক্ষী হিসেবে তদন্তে ডেকে পাঠানো হোক। যিনি সব জানেন, তিনি শুধু সংলাপ দিয়ে মেগা সিরিয়াল চালাবেন কেন? তদন্তে আসুন’


ফের বিস্ফোরক কুণাল ঘোষ


এই ট্যুইটে নিশানা কাকে। এই প্রশ্নের উত্তরে টেলিফোনে তিনি এবিপি আনন্দকে ( ABP Ananda ) জানান, যদি কেউ  অপরাধ করেন তাঁর শাস্তি হোক, কঠোরতম শাস্তি হোক। কিন্তু যিনি সব জানেন যিনি মাথা চেনেন, ঢাকি চেনেন, যিনি ধেড়ে ইঁদুর চেনেন, সবটা জানেন, তাঁকে দিয়ে এই মামলায় রোজ মেগা সিরিয়ালের মতো সংলাপ না বলিয়ে, একটু অন্য ভূমিকায় আনুন। তাঁকে সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় গোপন জবানবন্দি নেওয়া হোক সিবিআই আদালতে। তাহলে তদন্তে তাঁর অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হবে না কেন ?  '


আরও দেখুন :


'কেউ যদি নিজেকে অরণ্যদেব ভেবে নেন, সেটা দুর্ভাগ্যজনক', কুণালের নিশানায় কে?


কুণাল ঘোষের এই পোস্টের নিচে উপচে পড়ছে কমেন্ট। সরাসরি নাম না করলেও কুণাল ঘোষের মন্তব্য যে বিচারপতি বা বিচারব্যবস্থার দিকে, তা বুঝে নিয়েই নানা কমেন্ট করেছেন নেটিজেনরা।  অনেকেই পাল্টা আক্রমণ করেছেন কুণালকেই। বিরোধীরাও কুণালের ইঙ্গিতপূর্ণ ট্যুইট যে বিচারপতির দিকেই তা ধরে নিয়ে তাঁদের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।  


অত্যন্ত নিম্নরুচির রাজনৈতিক কর্মী  : বিকাশ 

এর প্রতিক্রিয়ায় আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ( Bikash Ranjan Bhattacharya ) বলেন, ' কুণাল ঘোষরা আসলে নিজেদের দোষী হিসেবে চিহ্নিত করে ফেলেছেন। বিচারপতি কিন্তু একবারও বলেননি তিনি ধেড়ে ইঁদুর বা মাথা কে। কুণাল ঘোষরা মনে করছেন তাঁরাই অপরাধী, তাঁরাই মাথা, যেহেতু গোটা দুর্নীতির প্রক্রিয়াটি তাঁরাই চালিয়েছেন। তাই তাঁদের আক্রমণের লক্ষ্য বিচারব্যবস্থা ও বিচারপতি। অত্যন্ত নিম্নরুচির রাজনৈতিক কর্মী বা নেতা  না হলে কেউ এভাবে বিচারপতি বা বিচারব্যবস্থাকে আক্রমণ করেন না। ' 


বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যও কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কুণাল ঘোষের ট্যুইটের। বিচারপতির পর্যবেক্ষণের  সামাজে  একটি গ্রহণ যোগ্যতা থাকে, জনমনে প্রতিষ্ঠা আছে। তার চ্যালেঞ্জ করারও অধিকার সংবিধান তাঁকে দিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত গণমাধ্যমে যে শব্দগুলো উচ্চারিত হয়েছে, তা না হলেও জনমনে প্রতিষ্ঠা আছে যে, যাঁদের এই দুর্নীতিতে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে, তাঁরা ছাড়াও অনেকে অপরাধী আছেন।'


এর আগে বিচারপতিকে নিয়ে বিভিন্ন সময় কুণাল ঘোষ বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। 'বিচারব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। বিচারব্যবস্থা ঠিক আছে বলেই সমাজ দাঁড়িয়ে আছে। বিচারপতিরা নির্দেশ দিলে মানুষ মাথা পেতে নেয়। গোটা বিচারব্যবস্থাই ন্যায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কেউ যদি নিজেকে অরণ্যদেব ভেবে নেন, সেটা দুর্ভাগ্যজনক। সরকারের ভুল হলে নিশ্চয় বলবেন। কিন্তু তার জন্য একটা দল তুলে দিতে বলবেন! কেউ যদি বলেন আমার দল তুলে দেবেন, আমি কি তাঁকে রসগোল্লা খাওয়াব?’ সম্প্রতি এই মন্তব্য করেন কুণাল।