কলকাতা: দলের সাংসদ (TMC MP) ও বিধায়কের (TMC MLA) লাগামছাড়া দ্বন্দ্বে এবার বিধায়কের পাশে দাঁড়ালেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের পাশে দাঁড়িয়ে ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহকে (Arjun Aingh) তুলোধনা করলেন কুণাল। মনে করালে লোকসভা ভোটের আগে দলবদলের কথাও।


তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'আগে নিজের এলাকা সামলান, দলের ব্যাপার দলকে বুঝতে দিন। আগে প্রায়শ্চিত্ত করুন, বেশি কথা বলতে যাবেন না।' কুণালের আক্রমণ, 'কোনটা দলের বিরুদ্ধে, কোনটা দলের পক্ষে, না জেনে কথা। ভোটের আগে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তখন তো দরদ ছিল না।'


দীর্ঘদিন ধরেই অর্জুন সিংহ ও সোমনাথ শ্যামের (Somnath Shyam) মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। সম্প্রতি তৃণমূল কর্মী ভিকি যাদক খুনের ঘটনার পর থেকে তা প্রকাশ্যে এসেছে। প্রতিদিনই একজন অপরজনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই কড়া সমালোচনা করছেন অথবা হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। কদিন আগেই অর্জুনের বিরুদ্ধে 'হলুদ ফাইল' জমা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সোমনাথ শ্যাম। ওই এলাকায় একের পর এক খুনের ঘটনার পিছনে যারা সব তথ্য তিনি দলকে তুলে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন অর্জুন সিংহ। এর মধ্যেই আবার অর্জুন সিংহের ছেলেকেও কাঠগড়ায় তুলেছিলেন সোমনাথ শ্যাম। দলের সাংসদ ও বিধায়কের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে পড়ায় অস্বস্তিতে দলও। দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্য বৈঠকের চেষ্টা করেছিল তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব। সম্প্রতি নৈহাটি যাওয়ার সময় অর্জুন সিংহকে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। নৈহাটিতে অর্জুন সিংহ ও সোমনাথ শ্যামকে মুখোমুখি বসিয়ে বৈঠক করে মেটানোর কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করলেও সেই বৈঠকে আসেননি সোমনাথ শ্যাম।


এই বিষয়টি নিয়ে কদিন আগেই কটাক্ষ করেছিলেন কুণাল ঘোষ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজেকে নিজের লোকসভা কেন্দ্রেই সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে, সেই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছিলেন সুব্রত বক্সি। তার পাল্টা কড়া সমালোচনা করেছিলেন কুণাল ঘোষ। খোঁচা দিয়েছিলেন বৈঠক অসফল হওয়া নিয়েও। এবার সোমনাথ শ্যামের পাশে দাঁড়িয়ে খোলাখুলি তোপ দাগলেন অর্জুন সিংহের দিকেই।


নতুন বছরের শুরু থেকেই ক্রমাগত সামনে আসছে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ঘটনা। দলের হেভিওয়েট সাংসদ, বিধায়ক, নেতারা ক্রমাগত একে অপরের বিরুদ্ধে খোলাখুলি তোপ দাগছেন। সামনেই লোকসভা ভোট। তার আগে প্রকাশ্য়ে এমন দ্বন্দ্ব কি ক্ষতি করবে তৃণমূলের সংগঠনে? 


আরও পড়ুন: '..ধারেকাছে কেউ নেই', তৃণমূলে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বের মধ্যে মন্তব্য উদয়নের