কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : গতকাল তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বুঝিয়ে দেন, দলে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে, বয়সের ঊর্ধ্বসীমা তিনি চান না। এর পর চব্বিশ ঘণ্টাও কাটল না। নেত্রীর তত্ত্বকে চ্য়ালেঞ্জ করে তৃণমূলের রাজ্য় সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বললেন, এরকম চললে সিপিএমের মতো অবস্থা হবে দলের। যার পরই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, তাহলে কি নব্য-আদি দ্বন্দ্ব ক্রমশ প্রকট হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসে ?


বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে (Netaji Indoor Stadium) মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের বক্তব্য়ে বারবার উঠে আসে পুরনোদের কথ। এমনকী বছরখানেক আগে, তৃণমূলে ভোটে দাঁড়ানোর বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার যে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, সৌগত রায়ের নাম করে, তা-ও সরাসরি উড়িয়ে দেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তৃণমূলনেত্রী বলেন, 'সৌগতদা মাঝে মাঝে বলেন, আমার তো বয়স হয়ে গেল! আরে কীসের বয়স! মানুষের মনের কি কোনও বয়স আছে? যাঁরা নতুন এসেছেন, পুরনোদের সম্মান দিয়ে মাথায় রাখবেন।'


যে প্রেক্ষিতে কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'মমতাদি যেটা বলেছেন ঠিক কথা বলেছেন, আচ্ছা একজন যদি দেহত্যাগ পর্যন্ত পদ ধরে থাকেন, সেই এলাকার তাঁর পরে যাঁরা, তা তাঁরা সেখানে কী করবে ? তাঁরা তো হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। সিনিয়ররা বলুন যে, আমরা অনেকদিন পদে আছি, MLA আছি, MP আছি, মন্ত্রী আছি এবার আমরা একটু সংগঠনে যাই। তা বলুন না। সেক্ষেত্রে বয়েসটা, সত্যি অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগবে।'  যারপর ঝাঁঝালো আক্রমণের সুরে জোড়েন, 'পার্টিটা যেন সিপিএমে পরিণত না হয়, যে যতক্ষণ না কেউ দেহত্যাগ করবে, ততক্ষণ পদত্যাগ করবে না। বয়স মানে রাজনীতি করুন, কিন্তু রাজনীতি মানেই MLA, MP, মন্ত্রী হতে হবে, নইলে আমি রাজনীতি করব না, এটা কোন দেশি ভাষা হচ্ছে?'


এর আগে একটি সাক্ষাৎকারে খোদ অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেছিলেন, আমি মনে করি অনেক কিছু হওয়া উচিত। সময়সীমা থাকা উচিত রাজনীতির ক্ষেত্রে। ৬৫ বছর হোক, ৬০ বছর হোক, ৭০ বছর হোক। এর ওপর রাজনীতি করা উচিত নয়, আমি মনে করি। লোকে রিটায়ার করে ৬০ বছরে, আপনি যদি গভর্নমেন্ট সার্ভিসে থাকে, কিংবা প্রাইভেট সেক্টরে থাকে, আপনি ৬০ বছর অবধি কাজ করবেন। আমি শুধু বেঙ্গলের জন্য় নয়, সবার জন্য় বলছি। আপনি ৬৫ করুন, ৭০ করুন, ৭৫ করুন, কিন্তু আমাদের দেশে কী হয়, কেউ যদি এমপি, যতক্ষণ না তিনি অসুস্থ হচ্ছেন, বা তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ছেন, ততক্ষণ তিনি এমপি, তিনি এমএল। এর সমাধান হওয়া উচিত। এবার যে সুর শোনা গেল কুণাল ঘোষের গলাতেও, যারপরই সামনে উঠে এসেছে তৃণমূলের নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত।


আরও পড়ুন- 'শুভেন্দু অধিকারী...মমতাদির প্রোডাক্ট', এ কী বললেন কুণাল?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে।
https://whatsapp.com/channel/0029VaCBCh6545uwkeNBg11y