প্রকাশ সিনহা ও সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নাম বলানোর জন্য় কেন্দ্রীয় এজেন্সি চাপ দিচ্ছে বলে, অভিযোগ করেছেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। এনিয়ে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, অতিচালাকি বরদাস্ত করা যাবে না। কুন্তল ঘোষের অভিযোগের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত এবং পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না বলেও অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।


কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নাম বলানোর জন্য় চাপ দেওয়ার অভিযোগ। কখনও আলিপুর আদালতের বিচারকের কাছে। কখনও আবার, সাংবাদমাধ্যমের কাছে সরাসরি, এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ।


ED-র দাবি, পুলিশের কাছেও এই একই অভিযোগ করেছেন কুন্তল। সূত্রের দাবি, প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের মাধ্যমে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ করেছেন বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা। এনিয়ে, এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, অতিচালাকি বরদাস্ত করা যাবে না।


সম্প্রতি, শহিদ মিনারের সভা থেকে কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরের দিনই সাংবাদিকদের সামনে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন কুন্তল। 


এই প্রেক্ষাপটে হেস্টিংস থানা সূত্রে দাবি, চাপ দেওয়ার ঘটনা, CGO কমপ্লেক্সে ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন কুন্তল। যেহেতু CGO কমপ্লেক্স বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় পড়ে, সেক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশ কী ধরনের পদক্ষেপ করতে পারে, তা নিয়ে শীর্ষস্তরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সূত্রের দাবি। এই পরিস্থিতিতে, কুন্তলের দেওয়া অভিযোগপত্র চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে ED। এনিয়ে, তারা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। 


তদন্তকারীদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ? তা জানতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এরপরই, এদিন কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে কুন্তলের তোলা বিস্ফোরক অভিযোগ নিয়ে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্তর্বর্তী নির্দেশে তিনি বলেন, কুন্তল ঘোষের অভিযোগের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত এবং পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না।


নিম্ন আদালতে জমা দেওয়া কুন্তল ঘোষের অভিযোগপত্র, বুধবার দুপুর তিনটের মধ্যে হাইকোর্টে পেশ করার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা বিচারককে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি, হেস্টিংস থানার অভিযোগপত্রও আদালতে পেশ করার জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।


এরপরই, বিচারপতি বলেন, এটা মারাত্মক প্রবণতা। তদন্তকারী আধিকারিকদের হুমকি দেওয়া এবং তদন্তের গতি স্তব্ধ করার জন্য এসব করা হচ্ছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে এসব বন্ধ করতে হবে। এই অতিচালাকি বরদাস্ত করা যাবে না। কুন্তল ঘোষের অভিযোগপত্র হাতে পাওয়ার পর, তা ED এবং CBI-কে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ফের এই মামলার শুনানি হবে হাইকোর্টে।