অমিত জানা, পশ্চিম মেদিনীপুর : কুয়েতের (Kuwait Fire ) সর্বগ্রাসী অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৫ ভারতীয়। তার মধ্যেই একজন পশ্চিম মেদিনীপুরের দ্বারিকেশ পট্টনায়েক। দুর্গাপুজোয় আসবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু ফেরা হল না আর। স্ত্রী ও মেয়ের কাছে ফিরবে কফিনবন্দি দেহ। 


দাঁতন দুই নম্বর ব্লকের খন্ডরুই গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন দ্বারিকেশ পট্টনায়েক। কুয়েতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে তাঁর প্রাণ। প্রায় ২৭ বছর ধরে কুয়েতে একটি বেসরকারি সংস্থায় সুপারভাইজার পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। দ্বারিকেশ আগে থাকতেন দাঁতনেরই তুরকাগড় এলাকায়। এখন তাঁর পরিবার থাকে মেদিনীপুর শহরের শরৎপল্লিতে। সেখানেই তাঁর শ্বশুর বাড়ি। দাঁতন দুই নম্বরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি কমলাকান্ত পট্টনায়েকের জামাই দ্বারিকেশ পট্টনায়েক।


কুয়েতের আবাসনে বিধ্বংসী আগুনের খবর টিভিতেই শোনে দ্বারিকেশের পরিবার। কিন্তু একবারও ভাবেননি ওই আবাসনেই থাকেন দ্বারিকেষ। বারবার তাঁকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু যোগাযোগ করা যায়নি। তারপর কুয়েত দূতাবাসের নম্বরে ফোন করতে জানা যায় দুঃসংবাদ। তারাই জানায় দেহ পৌঁছে দেওয়া হবে  কলকাতা বিমানবন্দরে। 


মেয়ের জন্মদিন ও দুর্গাপুজো উপলক্ষে সেপ্টেম্বরে দেশে ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড প্রাণ কাড়ল বিদেশে সুদীর্ঘকাল কর্মরত মানুষটির । তাঁর দেহ কবে ফিরবে সে ব্য়াপারে এখনও কোনও তথ্য় নেই পরিবারের কাছে। পরিবারের দাবি, সংস্থার তরফে মৃত্য়ুর খবর জানানো হলেও কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য় সরকারের তরফে তাদের এখনও কিছু জানানো হয়নি।    


বুধবার কুয়েতের শ্রমিক আবাসনে বিধ্বংসী আগুনে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে ৪৫ জন ভারতীয় বলে জানা গিয়েছে। মৃতদের মধ্যে ১২ জন কেরলের বাসিন্দা। এই ঘটনার কথা জানার পর উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা সাহায্যের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।


জানা গিয়েছে, মৃতদেহ পুড়ে যাওয়ায়, পরিচয় নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে দেহগুলির DNA পরীক্ষা করানো হবে। মৃতদেহগুলিকে বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে দেশে ফেরানো হবে বলে জানান বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেন রাহুল গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  


আজ বায়ুসেনার একটি বিমানে কুয়েতে মৃত ভারতীয়দের দেহগুলি দেশে ফিরিয়ে আনার কথা। শুক্রবার কেরলের কোচিতে নামার কথা বিমানটির। 


আরও পড়ুন :


দহনজ্বালা থেকে নেই মুক্তি, সাময়িক স্বস্তি দেবে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, আজ দুপুরের পর কোথায় ধারাপাত?