ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের বছরপার, ফের চিকিৎসককে ধর্ষণের হুমকি! ফের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজে ঢুকে মহিলা জুনিয়র চিকিৎসককে 'ধর্ষণের হুমকি' দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এখনও অপমানে, লাঞ্ছনায়, ঘটনার আকস্মিকতায় ত্রস্ত ওই চিকিৎসক। সেদিনের ঘটনার কথা বলতে গেলে দলা পাকাচ্ছে গলায়।হাসপাতালে ঢুকে ওই জুনিয়র চিকিৎসককে মারধর করে, প্রাণে মেরে ফেলা ও ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়, বলা হয় অশ্লীল, বিকৃত, নোংরা হুমকি। এদের মধ্যে একজন উলুবেড়িয়া ট্রাফিকগার্ডে কর্মরত হোমগার্ড। নাম শেখ বাবুলাল(৩৫)। ধৃত আরেক জনের নাম শেখ হাসিবুর (৩৫)। এই ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হলেও, প্রশ্ন উঠছে, এত আন্দোলন, এত প্রতিবাদের পরও এখনও কোত্থেকে আসে এত স্পর্ধা?
'লাঞ্ছিত' চিকিৎসকের কথা শুনলে শিরদাঁড়ায় শীতল স্রোত বইতে বাধ্য ! ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। মহিলা জুনিয়র চিকিৎসকের দাবি, ওইদিন সন্ধেবেলায় নিজের ভাইঝিকে নিয়ে, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে আসেন অভিযুক্ত শেখ বাবুলাল। তার সঙ্গে ছিলেন শেখ হাসিবুর সহ আরও জনা দশেক লোক। মহিলা জনিয়র চিকিৎসকের দাবি, ওই রোগীর শারীরিক পরীক্ষা করার পর, অসুস্থতা খুব একটা গুরুতর নয় বলে মনে হয় তাঁর। তখন তিনি বলেন, একটু পরে অন্য চিকিৎসক আসবেন, তাঁকে দেখাবেন। অভিযোগ, এরপরই দু পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বচসা। মহিলা জুনিয়র চিকিৎসকের ওপর রীতিমত চড়াও হন রোগীর আত্মীয়পরিজন। মারধরের ধর্ষণেরও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ মহিলা জুনিয়র চিকিৎসকের। অভিযুক্ত হোমগার্ড নিজেকে পুলিশ অফিসার বলে দাবি করে হুমকি-শাসানি দিতে থাকেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারিণী চিকিৎসকের কথায়, তাঁকে হুমকি দিয়ে বলা হয় ''আপনি জ্যান্ত কীভাবে বাড়িতে ঢোকেন আমি দেখে নেব।" তাঁর হাত মুচড়ে দেওয়া হয়, আরেকজন কাঁধে আঘাত করে। এরপর আরও কুৎসিত ভাষায় করা হয় আক্রমণ । বলা হয়, "রড ঢুকিয়ে দেব"। সে-কথা মনে করতে, বলতে কুণ্ঠায় জড়িয়ে যায় তাঁর কথা।
মঙ্গলবার হোমগার্ড সহ ধৃত ২ জনকে আদালতে তোলা হয়। দুজনকেই ৩ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালত। কিন্তু অভয়ার ঘটনার পর কেন এখনও হাসপাতালের নিরাপত্তায় ফাঁক থেকে যাচ্ছে ? উঠছে প্রশ্ন। চিকিৎসক হেনস্থার সময় নিরাপত্তা রক্ষী কোথায় ছিলেন? সূত্রের খবর, মেডিক্য়াল কলেজের প্রতিটি গেটে ২টি শিফটে ৬ জন পুলিশ কর্মী নিযুক্ত থাকেন। কিন্তু সব নিরাপত্তাই থাকে মূল বিল্ডিংয়ের বাইরে। তাহলে হাসপাতালের ভিতর পরিস্থিতি বিরূপ হলে, কী করবেন চিকিৎসকরা?