কলকাতা: বিশ্বভারতী এবং অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) মধ্যেকার জমি মামলা এখনও পর্যন্ত অমীমাংসিতই। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর সিউড়ি জেলা আদালতে মামলার পরবর্তী শুনানি। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল জায়গা দখল করে রাখার অভিযোগ। বিশ্বভারতীর তরফে সেই মর্মে জমি খারিজ করার নির্দেশও দেয়। বিষয়টি গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। (Visva Bharati)
মঙ্গলবার এ নিয়ে মুখ খোলেন সরকারি আইনজীবী শ্রীকান্ত রায়। তিনি জানান, বিশ্বভারতীর তরফে যে উচ্ছেদের নোটিস ধরানো হয়েছিল অমর্ত্যকে, সেটিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানি রয়েছে। মামলাটি বিচারাধীন চলাকালীন উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারবে না বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতীর উচ্ছেদের নোটিসেই স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত।
এমনিতেই বিশ্বভারত এবং অমর্ত্য সেনের মধ্যেকার জমি মামলা বার বার পিছিয়ে গিয়েছে আদালতে। এর আগে মে মাসে, আদালেত অনুপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের আইনজীবী। হাইকোর্টে যেখানে আবেদন জমা পড়েছে, সেই আবহে নিম্ন আদালেত বিষয়টি নিয়ে আদৌ শুনানি সম্ভব কিনা, এই প্রশ্নও তুলেছিলেন অমর্ত্যের আইনজীবী। তার পরেও নিষ্পত্তি হয়নি।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ডেসিমল জমি অমর্ত্যের পৈর্তৃক বাড়ি প্রতীচীর মধ্যে ঢুকে রয়েছে। যদিও বিশ্বভারতীর দাবি খারিজ করে দিয়েছেন অমর্ত্য। তাঁর দাবি, প্রতীচীর জমি তাঁর বাবা কিনেছিলেন। উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি তা ভোগ করছেন। সেই নিয়ে টানাপোড়েন চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এ বছর ১৪ এপ্রিল প্রতীচীর বাইরে নোটিস ঝোলায় বিশ্বভারতী। ৬ মে-র ডেডলাইন-সহ উচ্ছেদের নোটিস দেয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জায়গা খালি না করলে বলপ্রয়োগের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
অমর্ত্যের প্রতি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই আচরণের তীব্র নিন্দা করেছে রাজ্য সরকার। সমাজের বিশিষ্ট মানুষজনেরাও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। সম্প্রতি সেই নিয়ে দেশের রাষ্ট্রপতিকে চিঠিও লেখেন দেশ-বিদেশের ৩০২ জন অধ্যাপক। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অমর্ত্যকে হেনস্থা করছেন বলে অভিযোগ কার হয় তাতে। বিশ্বভারতীর জমি জবরদখল হয়ে গিয়ে থাকলে, বিগত ৮০ বছরে তা টনক পড়ল না কেন, বিদ্যুৎ দায়িত্বে আসার পর হঠাৎ এত শোরগোল কেন, প্রশ্ন তোলেন শিক্ষাবিদরা। কেন্দ্রের NDA সরকারের থেকে অমর্ত্যের আদর্শ আলাদা বলেই বিদ্যুৎ অমর্ত্যকে হেনস্থা করছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়।