সুনীত হালদার,হাওড়া : গ্রাম জুড়ে সাড়ম্বরে ধনদেবীর আরাধনা। এই গ্রামে দুর্গাপুজো নয়, লক্ষ্মীপুজোই মূল উত্‍সব। বছরভর লক্ষ্মীপুজোর দিকেই তাকিয়ে থাকেন গ্রামবাসীরা। লক্ষ্মীপুজোতেও তাই থিম। বিষয় ভাবনায় অভিনবত্বের ছোঁয়া।

  


আদর, আপ্যায়ন লক্ষ্মীর
হাওড়ার আমতার জয়পুরের খালনা গ্রামে দুর্গার থেকেও বেশি কদর, আদর, আপ্যায়ন লক্ষ্মীর। গ্রামবাসীরাই জানাচ্ছেন, প্রায় ফি বছর আমতায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই সেই বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে খালনা গ্রামে লক্ষ্মীর আরাধনা করেন গ্রামবাসীরা। 


বারোয়ারি পুজো  ২৫
বছর বারোয়ারি পুজো হচ্ছে প্রায় ২৫টি।  বাড়ির পুজোর সংখ্যা ১০০-র বেশি।  আশপাশের এলাকায় এই গ্রামের পরিচিতি লক্ষ্মীর গ্রাম হিসেবে।  অনেক বারোয়ারি পুজোর মণ্ডপেই প্রাধান্য পেয়েছে থিম।  কোথাও কোভিডের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে হাসপাতাল, কোথাও প্রয়াত গায়ক গায়িকাদের স্মরণ করে তৈরি হয়েছে থিম- সরগম।  


থিম লক্ষ্মী পুজো 
খালনার আমরা সবাই ক্লাবের পুজোর উদ্যোক্তা আশিস বোধক জানালেন, 'আমাদের থিম কোভিড। কোভিডকে হারিয়েছি। মণ্ডপ তৈরি হয়েছে হাসপাতালের মডেলে।  কোভিড এখানে অসুর।' 


এক স্থানীয় বাসিন্দা জানালেন, ' গ্রামে আমরা খুব বড় করে লক্ষ্মীপুজো করি। আনন্দে মেতে উঠি। ' 


এতটাই বড় করে এখানে লক্ষ্মীপুজো হয় যে, গ্রামের যে বাসিন্দারা বাইরে কাজ করেন, তাঁরা লক্ষ্মীপুজোর সময় গ্রামে ফেরেন। আত্মীয়রাও আসেন এই সময়ে। তিন-চারদিন ধরে এখানে লক্ষ্মীপুজো হয়। গত ২ বছর কোভিডের কারণে সেরকম জাঁকজমক হয়নি। এবার অবশ্য বাড়তি উত্‍সাহে লক্ষ্মীর আরাধনায় মেতেছেন খালনাবাসী।  


অন্যদিকে,


পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া শিল্পাঞ্চল লাগোয়া চাউলখোলা আর কিসমত শিবরামনগর, এই দুই গ্রামে গেলে এমনই থিমের লক্ষ্মীপুজো দেখা যাবে। লক্ষ্মীপুজোর প্যান্ডেলে কোথাও উঠে এসেছে আদিবাসী একটি গ্রাম, কোথাও আবার নারীশক্তি। কোথাও আবার থিম শস্যগোলা। হলদিয়া শহর লাগোয়া এই গ্রামগুলিতে চলে থিম নিয়ে একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা। 


                                                     


হলদিয়ার লক্ষ্মীগ্রাম
হলদিয়ার লক্ষ্মীগ্রাম হিসেবেই পরিচিত এই এলাকা। দুর্গাপুজো নয়, লক্ষ্মীপুজোই এখানকার প্রধান উৎসব! চাউলখোলার বাসিন্দা শিপ্রা মান্না জানালেন, 'পুজোকে কেন্দ্র করে বাড়িতে পুজো আত্মীয়স্বজন আসেন। দুর্গাপুজোর চেয়েও লক্ষ্মীপুজোয় আমরা বেশি আনন্দ করি।'