অর্ণব মুখোপাধ্য়ায় কলকাতা: ঘরোয়া গল্প, ব্যক্তিগত স্মৃতি থেকে ইতিহাস (memories to history), কী নেই! রবিবার, নন্দনে লীলা মজুমদারের (Leela Majumdar) সেই দুষ্প্রাপ্য লেখাই প্রকাশিত হল, দুই মলাটে। নাম 'রায়বাড়ি' (Ray Bari)। উপস্থিত ছিলেন, রায়বাড়ির সদস্য সন্দীপ রায় (Sandip Ray), প্রসাদরঞ্জন রায়-সহ (Prasad Ranjan Ray) অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
লীলার 'রায়বাড়ি'
বাঙালি যে দুটি পরিবারকে নিয়ে গর্ব করে, তার একটি যদি হয় ঠাকুর পরিবার তবে অন্যটি রায় পরিবার। সেই বাড়ি ও তার সদস্যদের কথা, একের পর এক লেখায় ফুটিয়ে তুলেছেন লীলা মজুমদার। ঘরোয়া গল্প, ব্যক্তিগত স্মৃতি থেকে ইতিহাস, কী নেই সেখানে! রবিবার, নন্দনে সেই দুষ্প্রাপ্য লেখাই প্রকাশিত হল, দু'মলাটে। নাম 'রায়বাড়ি'।
বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে ছিলেন, রায়বাড়ির সদস্য সন্দীপ রায়, প্রসাদরঞ্জন রায়-সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। পরিচালক সন্দীপ রায় বলেন, 'এটা তো লিলু দিদার নানান সময় লেখা সব বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশিত হওয়া বা অগ্রন্থিত মিলিয়ে একটা বই। ফলে আমার মনে হয় খুবই উপভোগ্য বই হবে। এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ দলিল বলে আমি মনে করি।'
প্রাক্তন আমলা প্রসাদরঞ্জন রায় বলেন, 'এখানে উপেন্দ্রকিশোর, প্রমদারঞ্জন, সারদারঞ্জন, এই তিনজন তো বটেই, এবং সুকুমার রায়েজের সব ভাইবোন, সবচেয়ে ছোট শান্তিলতাকে বাদ দিয়ে, তার বাইরে আমার বাবার কথা আছে। আরও দু-একজনের কথা আছে, যাদের ওপর উনি পুরো পুরো লিখেছিলেন।'
মাঝে ২ বছর আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। বিচিত্রা গ্রন্থন বিভাগ আয়োজিত এবং ‘সন্দেশ’ ও ‘বিচিত্রপত্র’ পত্রিকা নিবেদিত লীলা মজুমদার স্মারক বক্তৃতার এবার ছিল দ্বিতীয় বর্ষ। এবার বক্তৃতা রাখেন কবি যশোধরা রায়চৌধুরী। তাঁর কথায় উঠে আসে, কীভাবে নিজের লেখনির মাধ্যমে ছোট থেকে বড় সবার হয়ে উঠেছিলেন লীলা মজুমদার।
লেখায় নিজস্ব শৈলী তো ছিলই। আটপৌরে জীবনযাপনের লীলা মজুমদার ছিলেন বিদেশি রান্নাবান্নাতেও সিদ্ধহস্ত। রান্না নিয়ে সমানে চলত পরীক্ষা-নিরীক্ষাও। সেসব কথাও ফুটে উঠেছে দু'মলাটের 'রায়বাড়ি'তে।
আরও পড়ুন: Shah Rukh Khan: নিজের 'অপক্ক, অনিয়ন্ত্রিত' সত্ত্বাকে মনে করে নস্ট্যালজিক কিং খান
অন্যদিকে, দিন কয়েক আগেই সত্যজিৎ রায়ের ছোটগল্প 'খগম' গ্রাফিক নভেল আকারে প্রকাশিত হয়। বিশিষ্ট পরিচালক সন্দীপ রায় (Sandip Ray), কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় (Kamaleswar Mukherjee), লেখক রঙ্গন চক্রবর্তী-সহ একাধিক অতিথির উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে আসে সেই গ্রাফিক নভেল। স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ রায়। তাঁর কথায়, 'বাবার লেখা খগম একটি অন্যতম সেরা গল্প। এই গ্রাফিক নভেল তৈরির প্রস্তাব যখন আসে, তখন খুবই খুশি হয়েছিলাম। বাবার কাজ, তাঁর ভাবধারা, শিল্পরুচি, অক্ষুণ্ণ রেখেও যে তারা নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে এই কাজ করতে সফল হবে, এই বিশ্বাস আমার ছিল। বই, বিশেষত বাংলা বই পড়ার চর্চা এখনকার প্রজন্মের প্রায় নেই বললেই চলে। এই গ্রাফিক নভেল পড়ে যদি পাঠক আসল গল্পটি পড়েন এবং তাদের মধ্যে যদি বাংলায় বাবার লেখা আরও নানান গল্প পড়ার উৎসাহ জেগে ওঠে, সেটিই হবে এই প্রচেষ্টার আসল সার্থকতা।'