অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: চিতাবাঘের হামলায় (Leopard Attack In Alipurduar) আলিপুরদুয়ারে গুরুতর জখম ১১ বছরের বালক (District News)। আপাতত, বিরপারা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে সে। ঘটনার জেরে তুমুল আতঙ্কে স্থানীয়রা।
কী ঘটেছিল?
আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা ব্লকের দলগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতের তাসাটি চা বাগানের ঘাসি লাইনে ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধে ৩-৪ জন নাবালক বাগানের শ্রমিক মহলের রাস্তায় খেলছিল। খেলতে খেলতে ১১ বছরের দীপেশ ওঁরাও বাকিদের থেকে একটু দূরে চলে যায়। ঠিক তখনই চা বাগান থেকে বেরিয়ে আসা একটি চিতাবাঘ তাকে আচমকাই তুলে নিয়ে বাগানে গা ঢাকা দেয়। দীপেশের চিৎকারে প্রতিবেশিরা বেরিয়ে আসেন। স্থানীয়রা একত্রে চা বাগানের নির্দিষ্ট এলাকা ঘিরে তল্লাশিও চালান। চিৎকার-আওয়াজ করে তল্লাশির ফলে আতঙ্কিত চিতাবাঘ ভয়ে, নাবালকটিকে ফেলে অন্যত্র পালিয়ে যায় বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রাই। তার পরই রক্তাক্ত দীপেশকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় বিরপারা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, চিতাবাঘের আঁচড়ে শিশুর গলার অনেকটা অংশ কেটে গিয়েছে। মাথা এবং হাতেও আঁচড় বসিয়েছে প্রাণীটি। হাসপাতাল সূত্রে আরও খবর, আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই নাবালককে রেফার করা হয়েছে মেডিকেল কলেজে।
আগেও বার বার...
চিতাবাঘের আক্রমণের ঘটনা চা বাগান এলাকা একেবারে নতুন নয়। গত ২৭ আগস্ট, আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা ব্লকের জটেশ্বর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ব্যাংকান্দি গ্রামে চিতাবাঘের আক্রমণেই মৃত্যু হয়েছিল ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধার। এর পর, গত ১৭ ই সেপ্টেম্বর একই গ্রাম পঞ্চায়েতের দলগাঁও বনবস্তি এলাকায় চিতাবাঘের হানায় জখম হয় ৩ শিশু। ঠিক তিন দিন পর, ২০ সেপ্টেম্বর ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকেই বন দফতরের রাখা খাঁচায় বন্দি হয়েছিল একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ। তার আগে, গত এপ্রিলে, চলন্ত স্কুটিতে চিতাবাঘের হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন এক জন। সে বার ডুয়ার্সের মেটেলি ব্লকের আইভিল চা বাগানে ঘটনাটি ঘটে। মৃতের নাম সফিকুল ইসলাম। বয়স ৫০ বছর। ঘটনার গিন আইভিল চা বাগানে কাজে গিয়েছিলেন সফিকুল। রাতে স্কুটি চালিয়ে ফিরছিলেন। জানা যায়, আইভিল চা বাগানের বাংলো লাইনে আচমকা চলন্ত স্কুটির উপর একটি চিতাবাঘ লাফ দেয়। হঠাৎ চিতাবাঘের আক্রমণ পড়ে যান সফিকুল। এর পর তাঁর উপরই সরাসরি চড়াও হয় চিতাবাঘটি। সফিকুলের চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে তাঁকে মাল সুপার স্পেশ্যালিটি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। তার পর জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল সফিকুলকে। কিন্তু জলপাইগুড়ি নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান প্রৌঢ়।
আরও পড়ুন:কালও কি ভারী বৃষ্টি? কবে থেকে কমবে, জানিয়ে দিল আবহাওয়া দফতর