কলকাতা: তিন হাজার আটশো পয়ত্রিশ টাকা থেকে শুরু করে, সর্বোচ্চ চোদ্দ হাজার সাতশো পঞ্চাশ টাকা। শনিবার যুবভারতীতে মেসির ইভেন্টের টিকিটের দামের স্ল্যাব ছিল এটাই। আর হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটে মেসিকে দেখতে না পেয়ে, টিকিটের মূল্য ফেরত দেওয়ার দাবি আরও জোরালো হচ্ছে। যেকোনও উপায়ে রিফান্ড চাইছেন মেসি-ভক্তরা। 

Continues below advertisement

হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছিলেন। ইচ্ছে ছিল ফুটবলের শহরে ফুটবলের রাজপুত্রকে একঝলক দেখা। কিন্তু কোথায় কী? নেতা-মন্ত্রী-ভিভিআইপিদের ছেলে-মেয়েদের ভিড়ে মুখ ঢেকে গেছে মেসির। আর এই নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ ভক্তরা। 

ঘটনার পর কেটে গেছে ৩ দিন। টিকিটের টাকা আদৌ ফেরত পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা। ইভেন্টের আয়োজক সংস্থার কর্ণধার শতদ্রু দত্ত পুলিশ হেফাজতে। টাকা ফেরত নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফেও নির্দিষ্ট করে এখনও কিছু জানানো হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ক্রমশ ধৈর্যের বাধ ভাঙছে দর্শকদের। 

Continues below advertisement

দমদমের সিঁথির বাসিন্দা শুভ্রজিৎ গুপ্ত। তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে কর্মরত শুভ্রজিৎ মেসির ইভেন্টের টিকিট কেটেছিলেন ৫ হাজার টাকা দিয়ে। মেসিকে দেখতেও পাননি। টাকা ফেরত পাবেন কি না, তাও জানেন না। তাঁর কথায়, 'কোথাও রিফান্ড নিয়ে কেউ আলোচনা করছে না। যেভাবে হোক রিফান্ড চাই।' 

শুভ্রজিৎ গুপ্ত-র মতোই বহু টাকা খরচ করে শনিবারের অনুষ্ঠানের টিকিট কেটেছিলেন তেঘরিয়ার বাসিন্দা, আইটি কর্মী ধ্রুবজ্যোতি মণ্ডল। সাড়ে ৭ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটেও মেসি দর্শন হয়নি। তিনি বলেন, 'ভেবেছিলাম কম দামী টিকিটে ভাল দেখতে পাব না তাই সাড়ে সাত হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছিলাম। এত শাস্তি দিচ্ছে এতে কি ড্যামেজ কন্ট্রোল হবে? সদিচ্ছা থাকলে অনলাইনে রিফান্ড দেওয়াটা কোনও ব্যাপার না।'

৪ হাজার আটশো টাকার টিকিট কেটেছিলেন চিংড়িহাটার বাসিন্দা ঋতম নায়েক। টাকা ফেরতের দাবি করেছেন তিনিও। 

চাপের মুখে টাকা ফেরতের ব্যাপারে শনিবার আশ্বাস শোনা পাওয়া গেছিল রাজ্য পুলিশের শীর্ষ স্তর থেকে। রাজ্য পুলিশের DG রাজীব কুমার বলেন, 'সরকার একটি কমিটি তৈরি করে দিয়েছে। উদ্যোক্তাদের তরফে কোনও অব্যবস্থা ছিল কি না, তারা সব দিক দেখবে। যে সব টিকিট বিক্রি হয়েছে, সেই টাকা ফেরত দেওয়া হবে। আমরা ইতিমধ্যেই উদ্যোক্তাকে আটক করেছি।'

কিন্তু এরপর আর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি কোনও তরফেই। তবে মুখ্যসচিব ও তদন্ত কমিটির সদস্য মনোজ পন্থ জানিয়েছেন, 'যেটা আমরা পুলিশ থেকে খবর পেয়েছি,ওর উপরে আমরা আরও ওদের কাছে থেকে ডিটেলস চেয়েছি যে কীভাবে ওরা একটা পরিকল্পনা নিচ্ছে, কীভাবে করবে'। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায় বলেন, 'ওটাতে একটু সময় লাগবে' । 

জলে গেছে মেসির ইভেন্ট। জলে গেছে টিকিটের টাকাও। মেসিকে তো দেখা হল না। এবার কি অন্তত টিকিটের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা কেউ করবে? প্রশ্ন অসংখ্য মেসি-ভক্তর!