শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: বিধানসভা থেকে পঞ্চায়েত, আশানুরূপ ফল হয়নি কোনও নির্বাচনেই। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Elections 2024) আগে তাই কোনও খামতি রাখতে চাইছে না বঙ্গ বিজেপি (BJP)। তাই সংখ্যালঘুদের আস্থা অর্জনে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হল তারা। কোচবিহার (Cooch Behar News) থেকেই হল তার সূচনা। সেখানে জনসংযোগে জোর দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। 


২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তুলনামূলক ভাল করলেও, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে ২০০ আসনের লক্ষ্যপূরণের অনেক আগেই থেকে যেতে হয় বিজেপি-কে। তার পর থেকে যত সময় গিয়েছে, একের পর এক নির্বাচনে হতাশ হতে হয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তাই রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটতে নিজেদের পক্ষে টানতে উদ্যোগী হল তারা। 


বিজেপি মনে করছে, এরাজ্য়ের ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোট নিজের দিকে টানতে না পারলে, তৃণমূলকে টেক্কা দেওয়া সম্ভব নয় তাদের পক্ষে। তাই এখন থেকেই সেদিকে গুরুত্ব দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। যে কারণে ছ'দিন কোচবিহারে থেকে সংখ্যালঘু মোর্চা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে, জনসংযোগে জোর দিলেন ন্যাশনাল এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য মাফুজা খাতুন।


আরও পড়ুন: Kolkata Municipality: কলকাতা পুরসভায় ধুন্ধুমার, বিজেপি-তৃণমূল কাউন্সিলরদের মারামারিতে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি


২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ১২৫টি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে তৃণমূল ৯৩টি কেন্দ্রেই এগিয়ে ছিল। ১২টি সংখ্য়ালঘু প্রধান লোকসভার আসনের মধ্যে তৃণমূল সাতটিতে, কংগ্রেস দু'টিতে এবং বিজেপি একটিতে জয়ী হয়েছিল। কোচবিহারেও ২৯ শতাংশ সংখ্য়ালঘু ভোট তৃণমূলের দখলে ছিল।


এই প্রেক্ষাপটে, এবার তৃণমূলের দখলে থাকা সংখ্য়ালঘু ভোটে ভাগ বসাতে আসরে নামল বিজেপি। মাফুজা বলেন, "তৃণমূল তো বিজেপিকে অ্যান্টি মুসলমান বলে প্রচার করছে। ওরা সংখ্যালঘুদের ভয় দেখিয়ে নিজেদের দিকে ভোট নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু বিজেপি কখনওই সংখ্যালঘু বিরোধী নয়। মোদি বলেছেন, সবকা সাথ সবকা বিকাশ। মুসলিমরা সেই তিমিরেই আছে। মাদ্রাসা নিয়োগ বন্ধ। কেন্দ্রের প্রকল্পের পয়সা খেয়ে নিচ্ছে। আমরা বোঝাতে পারছি।"

জবাব দিতে দেরি করেনি তৃণমূলও। দলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, "বিজেপি সব জায়গায় ভাগাভাগির রাজনীতি করে। সংখ্যালঘুদের প্রতি দরদ দেখানোর চেষ্টা করছে। তারা যে কতটা পাশে সবাই জানে। বিজেপির ধর্মান্ধতার রাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষ ভোট দেবে।" কিন্তু আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহারে সংখ্যালঘুদের মন জেতার দৌড়ে কি বিজয়ী হতে পারবে বিজেপি, উত্তর দেবে সময়ই।