শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: অতি সম্প্রতিই বাংলা থেকে ঘুরে গিয়েছেন তিনি। নতুন বছরে ফের বাংলায় আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। তাও আবার চলতি জানুয়ারি মাসেই। বিজেপি সূত্রে খবর, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Elections 2024) প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে দলের অন্দরে। বাংলা থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে তার মেগা প্রচার শুরু করতে চলেছেন শাহ। 


বাংলা থেকেই লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু বিজেপি-র!


বিজেপি (BJP) সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১৭ জানুয়ারি হুগলির আরামবাগ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর, এই দুই লোকসভা কেন্দ্রে একই দিনে জোড়া সভা করবেন শাহ। এর আগে, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারেও বাংলায় একাধিক সভা করেছেন শাহ। ২০২৪-এর আগে বাংলাতেও তাঁকে দিয়েই প্রচার শুরু করাতে চলেছেন কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্ব। 


তবে শুধু শাহ নন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi), বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda)-কেও বাংলায় প্রচারে দেখা যাবে। বিজেপি সূত্রে খবর, এই তিন জনকে দিয়ে বাংলায় মোট ৪০টি সভা করানোর পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপি-র। এর মধ্যে শাহ এবং নাড্ডা, দু'জনে ১৩টি করে সভা করবেন। মোদি বাংলায় সভা করবেন ১৪টি। তাঁদের ছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি-র শীর্ষ নেতাদেরও বাংলায় দেখা যেতে পারে আগামী দিনে। 


আরও পড়ুন: Vande Bharat Express : নতুন বছরের প্রথমদিনে যাত্রী নিয়ে ছুটল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস


২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিল বিজেপি। তাতে ৩ থেকে ৭৭টি আসনে উঠে এলেও, ২০০ আসন জিতে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের। কিন্তু ক্ষমতায় না থাকলেও, এই মুহূর্তে বাংলায় প্রধান বিরোধী দল তারা। এক দশক আগে পর্যন্ত বাংলায় যাদের কোনও অস্তিত্বই ছিল না বলা চলে,  সেই বিজেপি-র এই উত্তরণকে খাটো করে দেখতে নারাজ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ক্ষমতাদখল ছাড়াও, বাংলায় বিজেপি যে বৃহত্তর লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে, তা বিগত এক বছর ধরে তাতা নানা কাজকর্মেই প্রমাণিত। 


লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও বাংলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কারণ, এর আগে ২০১৯ সালে একেবারে ১৮টি আসন দখল করে ২২টি আসন পাওয়া তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলার যাত্রা শুরু করেছিল তারা। অথচ ২০১৪ সালে মোদিজ্বরে গোটা দেশ কাবু হলেও, বিজেপি মাত্র দু'টি আসন পেতে সক্ষম হয়েছিল। এ বার বিজেপি আরও বড় লক্ষ্য নিয়ে নামতে চলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।


তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া ক্ষোভ হাওয়া জোগাবে বিজেপি-র পালে!


নিয়োগ দুর্নীতি থেকে আবাস যোজনায় গরমিলের অভিযোগে জেরবার শাসকদল তৃণমূল। আবার বিজেপি-র বিরুদ্ধে গিয়ে কেন্দ্রে বিরোধী শিবিরের গুরুত্ব পাওয়ার চেষ্টাতেও এখনও পর্যন্ত তেমন সাফল্য় পায়নি তারা। অন্য দিকে, বিহার, হিমাচল-সহ বেশ কিছু রাজ্য হাতছাড়া হওয়ায় বিজেপি বাংলা থেকে সম্ভাব্য আসনের ঘাটতি পুষিয়ে নিতে চতায়।  তাই বাংলায় তৃণমূলকে নিয়ে মানুষের মনে তৈরি হওয়া ক্ষোভকে কাজে লাগিয়েই গেরুয়া শিবিরের নেতারা যে বাজিমাত করতে চাইবেন, সে ব্যাপের নিশ্চিত রাজনৈতিক মহলের একাংশও।