সোমনাথ মিত্র,পাণ্ডুয়া: অঞ্চল তৃণমূল যুব সভাপতির বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ উঠল দলেরই নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে । পাশাপাশি স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে গিয়েও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে আতঙ্কে রয়েছে পঞ্চায়েত প্রধান । পাণ্ডুয়া ব্লকের হরাল দাসপুর পঞ্চায়েত এলাকার এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়েছে শাসক দলের অন্দরে। লোকসভা ভোটে জয়ের পরেও তৃণমূলের গোদ্বীদ্বন্দ্ব নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। ঘটনায় একজনকে গ্ৰেফতার করেছে পুলিশ।
অভিযোগ, গতকাল রাতে পাণ্ডুয়া ব্লকের হরাল দাসপুর অঞ্চল তৃণমূল যুব সভাপতি আসিফ মল্লিকের বাড়িতে হামলা চালায় স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি রাজা সরকার সহ তাঁর অনুগামীরা। ভাঙচুরের পাশাপাশি তাঁকে মারধর করা হয়। পরিবারের সদস্যরা বাধা দিতে গেলে তাঁরাও আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আসিফ মল্লিকের বাবা আব্দুল আজিম মল্লিক ও এক প্রতিবেশী। হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দলের একাধিক কর্মীর নামে পাণ্ডুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তৃণমূল যুব সভাপতি আসিফ মল্লিক। এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে একজনকে গ্ৰেফতার করেছে পান্ডুয়া থানার পুলিশ।
অন্যদিকে হরাল দাসপুর পঞ্চায়েত প্রধান করুণ ক্ষেত্রপালের বাড়িতেও হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে রাজা সরকার ও তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি প্রধানকে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান করুনা ক্ষেত্রপাল।
হরাল দাসপুর অঞ্চল তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি আশিফ মল্লিকের অভিযোগ, গতকাল রাতে বাড়িতে বসেছিলাম। হঠাৎ করে বাড়িতে চড়াও হয়ে বাড়িতে ভাঙচুর কারর সঙ্গে সঙ্গে মারধর করে রাজ্য সরকার সহ অন্যান্যরা। পরিবারের লোকজন বাধা দিলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। কারণ আমরা পঞ্চায়েতটা স্বচ্ছভাবে চালাচ্ছি। এখন কাজের ওপেন টেন্ডার হয়। কোন দূর্নীতি হয় না । তাই এই হামলা হয়েছে।।
হরাল দাসপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান করুণা ক্ষেত্রপাল জানান, "আমি তৃণমূলের প্রধান। আমি ভাবিনি যে এই দল করলে আমার এই পরিণতি হবে। দলের লোকেরাই এসে মারার হুমকি দেবে! ভাঙচুর করবে। আমাকে প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বলবে। রাজা সরকার সহ অন্যান্য তৃনমূল কর্মীরা এসব করেছে। কারণ আমি স্বচ্ছভাবে পঞ্চায়েত চালাচ্ছি। আমি ভোট করিয়েছি। ভালো করে আমরা জিতেছি। তারপরেও যদি এসব হয় তাহলে আমি কি করব ?"
আরও পড়ুন: Sikkim Landslide:ফের ধস সিকিমের মিমথামের শান্তিনগরে, যোগাযোগ বন্ধ বাংলার সঙ্গে
অভিযোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য রাজা সরকারকে একাধিক বার ফোন করা হলেও ফোনে পাওয়া যায় নি। অভিযোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া নেবার জন্য ম্যাসেজ করা হলেও তার কোন উত্তর দে নি রাজা সরকার।।
হুগলী জেলা তৃণমূল কংগ্ৰেস সাধারণ সম্পাদক তথা পাণ্ডুয়ার ছেলে তৃণমূল নেতা সঞ্জয় ঘোষ বলেন, "ঘটনাটা রাতেই আমার কানে এসেছে। সবাই তো তৃণমূলেরই লোক। কি কারণ ঘটনা ঘটেছে তার তদন্ত করে দেখা হবে। প্রশাসনকে বলেছি যদি কেউ দোষ করে তাহলে আইন আইনের পথে চলবে। দল কাউকে বলেনি মারধর করতে, ভাঙচুর করতে।"
এই ঘটনা নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। জেলা বিজেপি সভাপতি তুষার মজুমদার জানান, এটা এলাকা দখলের লড়াই। ভোটে জিতে কে কোন এলাকা দখল করবে, কী ভাবে তোলাবাজি করবে তার লড়াই চলছে।
আরও পড়ুন: Madan Mitra: 'দাদাগিরি' হয়ে যাচ্ছে না! সোহমের সমালোচনা করায় দেবকে একহাত নিলেন মদন