সমীরণ পাল, শিবাশিস মৌলিক ও রাজীব চৌধুরী, কলকাতা: ফের দলের একাংশকে নিশানা মদন মিত্রের। 'এখানে যারা আছেন, তার মধ্য়ে ৪০ শতাংশ তৃণমূলের দেওয়া চাকরি পেয়েছে। কিছু কর্মী আছে যারা দলটাকে খুবলে নিয়েছে', তৃণমূলের কর্মীসভা থেকে দলের কর্মীদের নিশানা কামারহাটির বিধায়কের।
আরও পড়ুন, তাপমাত্রা বাড়তে পারে ৩-৪ ডিগ্রি পর্যন্ত ! দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকছে কবে ? রইল আবহাওয়ার বড় আপডেট
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় চলছে রাজ্যে!প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে গেছে!আরও ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরির ওপর খাঁড়া ঝুলছে!একইসঙ্গে পুর দুর্নীতি নিয়েও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এমন একটা সময়ে তৃণমূলের চাকরি দেওয়া নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র! ইতিমধ্যে তাঁর বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। বৃহস্পতিবার কামারহাটির নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের কর্মিসভা ছিল। সেখানে ভাষণ দেওয়ার সময় দলের একাংশকে বার্তা দিতে গিয়ে তৃণমূল আমলে চাকরি নিয়ে মন্তব্য করেন মদন মিত্র।কামারহাাটি তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, 'আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, এখানে আমি জানি না, অন্য কোথায় কে কী বলবে, এখানে যাঁরা আছেন, তার অন্তত ৪০ শতাংশ তৃণমূলের দেওয়া চাকরি পেয়েছে। এর মধ্য়েও ৪০ শতাংশ। আমি মদন মিত্র বলছি।'
এখানেই বিরোধীদের প্রশ্ন, কোন চাকরির কথা বলছেন মদন মিত্র? রাজ্যে তৃণমূলের সরকার চলছে ঠিকই, কিন্তু চাকরি তো দেয় সরকার! তৃণমূল চাকরি দেওয়ার কে? তাহলে কি মদন মিত্র সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে স্বজনপোষণের অভিযোগ মেনে নিচ্ছেন? সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কি নতুন ক্রাইটেরিয়া এখন তৃণমূল কংগ্রেস করা? মদন মিত্রের এ হেন মন্তব্য সামনে আসার পর, অনেকেরই মনে পড়ে গেছে, পুর নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিটের কথা। তাতে বলা হয়েছিল,২০১৪-র পর থেকে রাজ্যের ১৭টি পুরসভায় অর্ধেকের বেশি নিয়োগই বেআইনি!যার মধ্যে অন্যতম কামারহাটি পুরসভা। এখানে ৩০৩ জনের চাকরির ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রশ্ন উঠেছে।
এমনকী তদন্তে নেমে তৃণমূল পরিচালিত কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহার বাড়িতে তল্লাশি অভিযানও চালিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তাঁকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার কামারহাটিতে দলের কর্মিসভায় তৃণমূল আমলে চাকরি ছাড়াও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য শোনা গেছে মদন মিত্রের গলায়। কামারহাাটি তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, যাঁরা (চাকরি) পাননি তাঁদের মুখটার দিকে তাকিয়ে দেখুন তো, তারা কী ভাবছে। যে আমরা কিছু না পেয়ে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াচ্ছি। আর যারা যারা পার্টিটাকে খুবলে খুবলে নিল, চেটেচুটে মাখন করে দিল পার্টিটাকে।
প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন,তৃণমূল দলের সব জেলাতেই হয়েছে এরকম। নতুন আর কী! তৃণমূল দল তো অন্তর্দ্বন্দ্বে ক্ষতবিক্ষত সবাই জানে এটা। তার নানারকম বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে বাংলা জুড়ে দেখতে পাচ্ছে। এটার মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই, এটাই তৃণমূল। সবমিলিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি, চাকরি বিক্রির অভিযোগ ঘিরে চাকরি বাতিল এবং তা নিয়ে যখন রাজ্যজুড়ে তোলপাড় চলছে, তখন নতুন বিতর্ক শুরু হল কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের বক্তব্যে।