সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: এবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতা নিয়ে আগাম ইঙ্গিত মদন মিত্রর (Madan Mitra)। আজ-কালের মধ্যে বরানগর-কামারহাটির পাড়ায় পাড়ায় ঢুকবে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। বরানগরে কর্মি সম্মেলনের মঞ্চ থেকে এমনটাই ভবিষ্যদ্বাণী কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রর।
কী বলেছেন মদন:
কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, 'বড় লড়াইয়ের জন্য তৈরি হোন। পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) কিন্তু আরও অত্যাচার বাড়বে। আগামীকাল-পরশুর মধ্যে হয়তো বরানগর, কামারহাটির পাড়ায় পাড়ায় অত্যাচার বাড়বে। এজেন্সির নামে লোক ঢুকে যাবে। ঘাবড়াবার কিছু নেই। মাথা তুলে থাকবেন। যাই হোক না কেন, আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই লড়াইটা লড়ে নেব।'
একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে রাজ্যে। আদালতের নির্দেশে ওই মামলাগুলি নিয়ে তদন্ত করছে একাধিক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একাধিক তদন্ত চলছে। রয়েছে গরু পাচার, কয়লা পাচার সংক্রান্ত মামলাও। একের পর এক কেলেঙ্কারির অভিযোগের তদন্তে তৎপর কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তদন্তে মাঝে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রী গ্রেফতার হয়েছেন। তৃণমূলের বেশ কিছু বিধায়কও গ্রেফতার হয়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। গরু পাচার মামলায় জেলে রয়েছেন অনুব্রত মন্ডল। গরুপাচার মামলায় তিহার জেলে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের মেয়েও।
এই প্রেক্ষাপটেই একদিকে যখন দুর্নীতির মাথা খুঁজতে সিবিআই (CBI)- ইডি (ED) তৎপরতা বাড়াচ্ছে এবং সেই সূত্র ধরে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব বারবার প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ তুলছে, ঠিক তখনই কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতা নিয়ে কার্যত ভবিষ্যদ্বাণী করে শোরগোল ফেললেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র।
মদনের বক্তব্য নিয়ে তোপ দেগেছে বিজেপি। কটাক্ষ করেছে সিপিএমও। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মন্তব্য করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন মদন। তিনিই হঠাৎ এমন করে বললেন কেন? কামারহাটির তৃণমূল বিধায়কের বক্তব্য়ে কি বিশেষ কোনও ইঙ্গিত রয়েছে? তা নিয়েই তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা।
কদিন আগেও বিতর্ক:
সম্প্রতি শিল্পী শুভাপ্রসন্নর সঙ্গে মদন মিত্রের বাগযুদ্ধও রাজ্য-রাজনীতিতে বিতর্ক তৈরি করেছিল। 'দ্য কেরালা স্টোরি' ছবির প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন তৃণমূল ঘনিষ্ট বলে পরিচিত শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। মুখ্য়মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছিলেন। এবার পাল্টা তাঁকে বিস্ফোরক ভঙ্গিতে নিশানা করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। পাল্টা আবার মুখ খুলেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। শুভাপ্রসন্ন বলেছিলেন, 'হিটলারি একটা শাসন... এটা তো বজরং দলের কাজ। মমতা নিজে শিল্পী, যা করেছে, সেটা অন্যায়।' আর এরপরই তোপ দেগেছিলেন মদন মিত্র। কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক বলেছিলেন, 'কে শুভাপ্রসন্ন? খায় না, মাথায় দেয়? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুদিন ওর বাড়িতে পায়ের ধুলো দিয়েছিল বলে শুভাপ্রসন্ন শুভাপ্রসন্ন হয়েছে। শুভাপ্রসন্নর কাছ থেকে জ্ঞান শুনবো না। যখন যেমন, তখন তেমন! আপনি যাকে স্তাবকতা বলছেন, সেই স্তাবকতার বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি তো উপাচার্য। স্তাবকতা তো আপনিই শুরু করেছেন! আমি তো সাক্ষী! কিছুদিন চুপ থাকুন।'
আরও পড়ুন: গরমের মরসুমে রাতের ঘুমে সমস্যা? সমাধানে মেনে চলতে পারেন সহজ কয়েকটি নিয়ম