কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, ভাস্কর মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা : 'আদিখ্যেতা করে তাঁকে অতিমানব বানানো হচ্ছে, তার প্রতিবাদ করছি' সোমবার অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আরও বেলাগাম আক্রমণ করেন কুণাল ঘোষ। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যখন রোগসজ্জায়, তখন তাঁর উদ্দেশে এমন মন্তব্য নিয়ে রাজনীতিতে তোলপাড় হয়েছে। কুণালের মন্তব্যের একেবারে উল্টো সুরে তৃণমূলেরই বিধায়ক মদন মিত্র বলছেন, "বুদ্ধবাবু যদি অসৎ হন, তাহলে ভগবান বুদ্ধর সততা নিয়ে আলোচনা করতে হয়!' 


বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর শিরদাঁড়া সোজা : মদন


বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর সেরে ওঠার প্রার্থনা করছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। সেই অগণিত মানুষের মধ্যে রয়েছেন ভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরের নেতারাও। ঠিক যেমন মদন মিত্র। রাজনৈতিক ভাবে ভিন্ন মতাদর্শী হলেও অসুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে আবেগতাড়িত হয়েই মন্তব্য করেছেন। 'সবকিছু ছাড়িয়ে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সৎ। বুদ্ধবাবু যদি অসৎ হন, তাহলে ভগবান বুদ্ধর সততা নিয়ে আলোচনা করতে হয় ! আমি ওনার পার্টি করি না। কিন্তু জানি, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর শিরদাঁড়া সোজা।'  


মদন আরও বলেন,'শ্রদ্ধা করি ওনাকে। এ সমাজে শিরদাঁড়া ভাড়া পাওয়া যায় না। বিরল রাজনীতিবিদ। ওনার আমলে কিছু সমস্য়া হলেও উনি ভাল। এখন যারা রাজনীতিতে আসছে তাদের মডেল' 


মদনদা কোন মঠে দীক্ষা নিলেন ! পাল্টা কুণাল


মদনের এ হেন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কুণাল ঘোষ বলেন, 'তখন মদনদা তো এনাদের যে আক্রমণ করতেন, সেগুলো দেখেই আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছি। মদনদা এবং মদনদারা। তো ফলে আজকে মদনদার এই যে অন্য ধরনের একটা চৈতন্যের বহিঃপ্রকাশ চলছে, এটা কেন হল, কোন মঠে দীক্ষা নিলেন, সেগুলো আমরা দেখে নেব। গৌড়িয় মঠ না কোনও বৌদ্ধ মঠ...সেগুলো কথা বলে নেব।' 


ABP Ananda কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি সরাসরি জানান, 'বুদ্ধদেববাবু দীর্ঘদিন সুস্থ শরীরে বেঁচে থাকুন। কিন্তু তার মানে এই নয়, জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব বাবুর সরকার একের পর এক গণহত্যা, পুলিশ দিয়ে সন্ত্রাস, চরম ঔদ্ধত্য়ে দে হ্যাভ বিন পেড ব্যাক বাই দেয়ার ওন কয়েনস্। সন্ত্রাস ছড়িয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।'  


শনিবার রাতে, ফেসবুক পোস্টে কুণাল ঘোষ লিখেছিলেন, বুদ্ধবাবুর আরোগ্য আমিও চাই, উনি সুস্থ থাকুন। কিন্তু দয়া করে আদিখ্য়েতার পোস্টে ওঁকে মহাপুরুষ বানাবেন না। 


আর এতে মদনের প্রতিক্রিয়া, 'মেরেছিস কলসির কানা, তাই বলে কি প্রেম দেব না? কুণাল কী এই মার্গের কথা জানে না?' 


উনআশি বছর বয়সী এক ব্যক্তি রোগসজ্জায় থেকেও, আজও রাজ্য-রাজনীতিতে কতটা প্রাসঙ্গিক, এই বিতর্কই ফের তা প্রমাণ করে দিল।