কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : ২০২২-এর মাধ্যমিকের সিলেবাস থেকে বাদ ত্রিকোণমিতি, বামপন্থী ও শ্রমিক আন্দোলন। অষ্টমে সিঙ্গুর আন্দোলন পড়ানো হলেও বামপন্থী আন্দোলন কেন বাদ মাধ্যমিকে? দানা বেঁধেছে বিতর্ক। সিলেবাস কমিটির দাবি, সিলেবাসের শেষাংশ বাদ দেওয়া হয়েছে, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।


অষ্টমের সিলেবাসে সিঙ্গুর আন্দোলন। বামপন্থী ও শ্রমিক আন্দোলন বাদ মাধ্যমিকে। করোনা আবহে রাজ্যে পঠন-পাঠন বন্ধ স্কুলে।  এই পরিস্থিতিতে মাধ্যমিকের সিলেবাস কাটছাঁট নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে শিক্ষা মহলে। 


পরীক্ষা কবে হবে তা স্পষ্ট না হলেও ২০২২-এর কোন পাঠ্যক্রমে মাধ্যমিক হবে, তা নির্দিষ্ট করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আগামী বছর যারা মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে, তাদের মূল সিলেবাসের ৩০-৩৫ শতাংশ ভার কমানো হয়েছে। আর সিলেবাস হালকা করতে গিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। সিলেবাস কমিটি সূত্রে খবর, ২০২২ -এর মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচি থেকে বাদ পড়েছে ত্রিকোণমিতি,জৈব রসায়ন,পরিবেশ,ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন, ভারতে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন,স্বাধীনতা-উত্তর ভারত,অজৈব রসায়নের কিছু অংশ সহ বিভিন্ন বিষয়। 


অভিযোগ উঠেছে, সিঙ্গুরের আন্দোলন যেখানে অষ্টম শ্রেণির সিলেবাসে রয়েছে, সেখানে বামপন্থী আন্দোলন বাদ কেন? এর মধ্যে অভিসন্ধি দেখছেন কেউ কেউ। এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যর বক্তব্য,  ত্রিকোণমিতি না পড়লে তো ব্রিজ ভেঙে পড়বে। সিঙ্গুরের আন্দোলন পড়তে হচ্ছে, তেভাগা আন্দোলন বাদ। আসলে তৃণমূল ও বিজেপি তো একই। এরা ইতিহাস ও ঘটনাবলিকে বিকৃত করছে।


সিলেবাস তৈরির দায়িত্বে থাকা বিশেষজ্ঞ কমিটি এই অভিযোগ মানতে নারাজ। কমিটির পাল্টা দাবি, অতিমারীর কারণে ২ বছরের জন্য এই আপত্কালীন কাটছাঁট। সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার বলেছেন, ,আমরা যদি বাদ দিতাম তাহলে কি আগে সিলেবাসে রাখতাম..... জয় গোস্বামী ও মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাদ দেওয়া হয়েছে... সিলেবাসের শেষাংশ বাদ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাজনীতির কারণ খোঁজা ঠিক নয়। 


সম্প্রতি পাঠ্যক্রম থেকে মহাশ্বেতা দেবীর ছোটগল্প বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্কে জড়িয়েছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়। উত্তরপ্রদেশ বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যসূচি থেকে বাদ পড়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছুটি’ গল্প। অতিমারামীতে কাটছাঁট করতে এগিয়ে এবার বিতর্ক বাংলার মাধ্যমিকের সিলেবাস নিয়ে।


সূত্রের খবর, মাধ্যমিকের মতো করোনার জেরে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির সমস্ত সিলেবাসেও কাটছাঁট করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। তা হওয়ার পর বিতর্কের জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটাই এখন দেখার ।