ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: এত কমবয়সে হৃৎপিণ্ডে টিউমার (tumour)? ডাক্তারদের থেকে শুনে চমকে উঠেছিলেন মা-বাবা। সন্তান ছুরি-কাচির ধাক্কা সামলাতে পারবে তো? এখন দেখা যাচ্ছে, দিব্যি সামলে উঠেছে সে। এবার হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ  হওয়ার পালা।  


কোথায় কৃতিত্ব এসএসকেএমের?


এখানেই এসএসকেএমের (sskm) চিকিৎসকদের কৃতিত্ব! হৃৎপিণ্ডের (heart) টিউমার অপারেশন করে তাতে অটোমেটেড ইন্ট্রাকার্ডিয়াক ডিফ্রাইব্রিলেটার ডিভাইস (aicd) বসিয়ে আরও একবার আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন তাঁরা। বেশ জটিল অপারেশন। কিন্তু প্রথম বার নয়। আগেও এসএসকেএমের সিটিভিএস এবং কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকদের যৌথ প্রচেষ্টায় বহু অসাধ্যসাধন হয়েছে। রেকর্ড অক্ষত এবারও।
ঠিক কী করেছেন তাঁরা?
তার আগে ছোট করে রোগীর সমস্যাটা জেনে নেওয়া যাক। ইনট্রামায়োকার্ডিয়াল টিউমার বা সহজ কথায় হৃৎপিণ্ডের পেশিতে এক ধরনের টিউমার ধরা পড়েছিল তার। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় ওই টিউমারের নাম 'রাবডোমায়োমা।' ভ্রূণের হৃৎপিণ্ডের মধ্যে অনেক সময়ই এটি দেখা যায়। শিশুদের হৃৎপিণ্ডেও এই ধরনের টিউমার বেশ পরিচিত।  বিশেষত জন্মের এক বছরের মধ্যে যে কটি ইনট্রামায়োকার্ডিয়াল টিউমার হয়, তার মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের একাংশের। আশার কথা একটাই, এটির মতিগতি ক্যানসারের দিকে যায় না। কিন্তু তাতে বিপদ কিছু কম নয়।


বিপদ কীসে?


টিউমারের বাড়বৃদ্ধিতে রক্ত ঢোকা-বেরোনোয় অসুবিধা হলে কনজেস্টিভ হার্ট ফেলিওয়ের আশঙ্কা থাকতে পারে, বলছেন হৃৎশল্য চিকিৎসকরা। এছা়ড়াও একাধিক সমস্যার সম্ভাবনা রয়েছে। এসএসকেএমে আসা অল্পবয়সী ছেলেটির ক্ষেত্রেও এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যেত না। আর ঠিক সেখানেই সাফল্য চিকিৎসদের। সঠিক ভাবে টিউমারটি বাদ দিয়েছেন তাঁরা। সঙ্গে বসিয়েছেন এআইসিডি। লক্ষ্য একটাই। অনিয়মিত হার্টবিট নিয়ন্ত্রণ করা। সে কাজই করবে এআইসিডি। একই সঙ্গে টিউমার বাদ দিয়ে যন্ত্র বসানোর জটিল অপারেশন করে ফের তাক লাগিয়ে দিয়েছে এসএসকেএম। 
আর এই দুইয়ের সাফল্যে এবার নিশ্চিন্ত জীবনে ফিরতে চলেছে বাচ্চা ছেলেটি।


আরও পড়ুন:কাল হল অন্নপ্রাশনের অন্নই, প্রাণ হারাল একরত্তি