কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: দিন কয়েক আগে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যেই বিতর্কে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের (West Bengal Board of Secondary Education) নতুন সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় (Ramanuj Ganguly)। তৃণমূলের (TMC) দলীয় কার্যালয়ে দেখা গেল তাঁকে। শাসকদলের লোকজন মিলে তাঁকে সম্বর্ধনাও দিলেন। সেই ভিডিও ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। রাজ্যের শাসকদলের কার্যালয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতির এই উপস্থিতিতে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
তৃণমূলের দফতরে সম্বর্ধনা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রধানকে
পিছনে ২১ জুলাই, তৃণমূলের 'শহিদ দিবস'-এর ব্যানার ঝুলছে। তার উপরে লেখা তৃমূল-কংগ্রেস। ঠিক তার সামনে দাঁড়িয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি। আশেপাশে শাসকদলের লোকজন। তাঁদের অনুকরণেই গলায় তেরঙ্গা উত্তরীয় ঝুলছে তাঁর গলায়। হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দিয়ে সকলের সম্বর্ধনা দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ঝড়ের গতিতে।
ভিডিওটি সামনে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগের অভিযোগ নিয়ে যখন উত্তাল রাজ্য, সেই সময় তৃণমূলকে বিতর্ক থেকে দূরত্ব বাড়াতে দেখা গিয়েছিল। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ একটি স্বতন্ত্র সংস্থা, তার সঙ্গে তাঁদের ক্ষমতাসীন সরকারের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করতে দেখা যায় দলের লোকজনকে। তাই প্রশ্ন উঠছে, স্বশাসিত সংস্থার পদে থেকেও কীভাবে রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে গেলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি?’
যদিও বিতর্কে কর্ণপাত করতে নারাজ রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "শিক্ষকদের কাছ থেকে শুভেচ্ছা নিয়েছি। পদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।" কিন্তু স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের সচরাচর কোনও রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে বা দলীয় অনুষ্ঠানে দেখা যায় না। কিন্তু মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতিক তৃণমূলের কার্যালয়ে এহেন উপস্থিতিতে ভাল টচোখে দেখছেন না কেউ।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, "গোটা বিষয়টি অত্যন্ত অদ্ভুত বলে মনে করছি আমি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি হন বা উপাচার্য, পদে বসার পর আর কোনও দলের লোক থাকেন না তাঁরা। পদে থাকাকালীন চকোনও রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে সম্বর্ধনা নিতে পারেন না তাঁরা। এটা অশোভন বলে মনে হয় আমার।"
এক সপ্তাহ আগেই দায়িত্ব নিয়েছেন রামানুজ
গত সপ্তাহেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দায়িত্ব গ্রহণ করেন রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। বারাসাত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রামানুজ। কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসি বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় তাঁর জায়গায় বসানো হয় রামানুজকে। সিবিআই-এর জেরার মুখেও পড়েন কল্যাণময়। বাড়ি থেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দফতরে এনে তাঁকে জেরা করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাঁর অফিসে ঢুকে চালানো হয় তল্লাশিও। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কর্মীদেরও।