ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর: মহাকুম্ভে গিয়ে নিখোঁজ কাঁথি ছোটবাঁধ তলিয়ার জুনপুট কোস্টাল থানার বাসিন্দা প্রণব কুমার জানা। বয়স ৭৫। একদিন কেটে গেল খোঁজ নেই ওই ব্যক্তির। তাই চোখের জলে চিন্তায় উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন পরিবারের লোকজনেরা। 

ইতিমধ্যে মহাকুম্ভের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন নিখোঁজ ব্যক্তির ছেলে আনন্দ জানা। এমনকী তিনি কাঁথির সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সৌমেন্দু অধিকারী ওখানকার প্রশাসনকে মেল করে সমস্ত ঘটনা জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। গত সোমবার কলকাতার আত্মীয় বলাই দাসের পরিবারের সঙ্গে পবন কুমার জানা কুম্ভ মেলার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। গত মঙ্গলবার গাড়িতে সমস্ত কাপড় রেখে স্নানের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। আত্মীয়র অন্যান্য লোকেরা ফিরে এলেও এখনও পর্যন্ত পবন কুমার জানার কোনোও খোঁজ নেই। ঘনঘন সেখানে মাইকিং এর প্রচার হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পরিবারের লোকেরা তার খোঁজ না পাওয়ায় আজ ভোরে মহা কুম্মের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। আনন্দ বাবু জানান,  "বাবার খোঁজ না পাওয়ায় ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়েছি। তাই মহা কুম্ভের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি জানি না বাবাকে আর ফিরে পাব কি না।'' তবে সেখানকার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এরাজ্যের দুই বাসিন্দার। কলকাতা পুরসভার ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়গড়ের বাসিন্দা বাসন্তী পোদ্দার। সোমবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রয়াগরাজে গেছিলেন তিনি। মৌনী অমাবস্যার শাহিস্নানের আগেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। এদিকে, মহাকুম্ভে চূড়ান্ত পুলিশি অব্যবস্থার অভিযোগ করেছেন নিহতের ছেলে। বৃহস্পতিবার, প্রয়াগরাজ থেকে মৃতদেহ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয় বিজয়গড়ের বাড়িতে। এদিকে বৃদ্ধার দেহ হস্তান্তর করা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর। তাঁর অভিযোগ, ইস্যু করা হয়নি কোনও ডেথ সার্টিফিকেট। এমনকী, দেহ হস্তান্তর করার সময় মৃতার ছেলেকে দিয়ে একটি কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়। অভিযোগ, সেই কাগজে ছিল না কোনও সরকারি আধিকারিকের সই। এর ফলে মৃতার পরিবার আদৌ আর্থিক সাহায্য পাবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর। মহাকুম্ভে পুণ্যস্নান করতে গিয়ে ফেরা হল না পশ্চিম মেদিনীপুরের এক বাসিন্দারও। শালবনির গোদাপিয়াশালের বাসিন্দা ঊর্মিলা ভুঁইয়া (৭৫)। দুই মেয়ে, জামাই, আত্মীয়দের নিয়ে তিনিও সোমবার গেছিলেন প্রয়াগরাজে। পরিবারের দাবি, মঙ্গলবার রাতে হুড়োহুড়ির সময় বৃদ্ধা আলাদা হয়ে যান। বুধবার সকালে মেলা প্রাঙ্গণে, হাসপাতালে খোঁজ নিতে গিয়ে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন, পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এসবের মধ্যে প্রশাসনিক ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার।

আরও পড়ুন: MAKAUT Wedding Controversy: "জোলো লেগেছে...কার ইঙ্গিতে এই ঘটনা?'' ম্যাকাউটের ঘটনায় মন্তব্য শিক্ষামন্ত্রীর