সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি:  ৬২৭ বছরে পদার্পণ করলেন এবারে মাহেশের (Mahesh) ঐতিহাসিক  রথযাত্রা (Rath Yatra)। তার আগে আজ তিথি মেনে অনুষ্ঠিত হল জগন্নাথের স্নানযাত্রা। পুরীতে (Puri) যেমন ১২ বছর অন্তর নব কলেবর হয়, মাহেশে বিগ্রহের কোনও পরিবর্তন করা হয় না। এতবছর ধরে একই বিগ্রহকে পুজো করা হচ্ছে।


আজ সকালে গর্ভগৃহ থেকে বের করে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে মন্দিরের বারান্দায় রাখা হয়। রবিবার একেবারে তিথি মেনে সকাল ৯ টায় জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে মন্দির সংলগ্ন স্নানপিঁড়ির ময়দানে স্নানবেদিতে তোলা হয়। এবার গজ বেশে জগন্নাথ স্নানপিঁড়ির মঞ্চে ওঠেন।  সেখানে মোট ২৮ ঘড়া গঙ্গা জল, ও দেড় মন দুধ দিয়ে প্রভুকে স্নান করানো হয়। আর জগন্নাথ দেবের এই স্নানযাত্রা চাক্ষুষ করার জন্য বহু দূর দূরান্ত থেকে প্রচুর ভক্ত এদিন এখানে আসে। 


পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী গণপতি ভট্ট ছিলেন গণেশের উপাসক। তিনি পুরী নীলাচলে গণপতি দর্শনের উদ্দশ্যে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে গণেশকে দেখতে না পেয়ে মনোদুঃখে ফেরার পথ ধরেন। সে সময়ে জগন্নাথ ব্রাহ্মণবেশে তাঁর সামনে আসেন। তাঁকে বলেন স্নানবেদীতে যেতে। সেখানে পৌঁছেই অবাক গণপতি ভট্ট। সেখানে জগন্নাথকে গজবেশে দেখতে পান গণপতি। স্নানযাত্রার দিন তাই জগন্নাথদেব গজবেশই ধারণ করেন।


কথিত আছে এই স্নান পর্ব শেষ হলে জগন্নাথের জ্বর আসে। এই সময়ে ১৫ দিন মন্দিরের গর্ভগৃহের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোনও ভক্ত এই সময়ে দর্শন পান না। এর পনেরো দিন পর জগন্নাথের জ্বর সারাবার জন্য বৈদ্য এসে পাচন দিয়ে জ্বর সারান। রথযাত্রার ২ দিন আগে ফের মন্দির খোলা হবে। সেদিনই হবে নব কলেবর উত্সব। তার পর দিনই অনুষ্ঠিত হবে ২০২৩ এর ৬২৭ বছরের মাহেশের ঐতিহাসিক রথযাত্রা। 


 


কথিত আছে, জৈষ্ঠ মাসের পূর্ণি তিথিতে স্বয়ম্ভু মনুর যজ্ঞের প্রভাবেই জগন্নাথ দেবের আবির্ভাব ঘটেছিল। স্বয়ম্ভু মনুই এই তিথিতে জগন্নাথ দেবের আবির্ভাবের দিন হিসেবে পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রভু জগন্নাথ দেবের জন্মদিন উপলক্ষেই বিশেষ স্নান উৎসবের সূচনা হয়েছিল। মাহেশে এদিন সাড়ম্বরে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা পালিত হয়েছে।                              


 


আরও পড়ুন, সাইকেলকে বাংলায় কী বলে জানেন? অধিকাংশ মানুষই এর উত্তর দিতে পারেন না