আবির দত্ত, অর্ণব মুখোপাধ্যায়, মহেশতলা : রবীন্দ্রনগর থানার সামনে মাইকিং করে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে ওই এলাকায় জারি করা হয়েছে সিআরপিসি ১৪৪ ধারা (বিএনএস ১৬৩ ধারা)। এই নিয়ম অনুসারে, একসঙ্গে ৫ জন বা তার বেশি সংখ্যক মানুষ থাকতে পারবেন না এক জায়গায়। এই নিয়ম না মানলে আইন অনুসারে যথাযত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ ডিস্ট্রিক্টের তরফে মাইকে প্রচার করা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মহেশতলার রবীন্দ্র নগর থানা এলাকা ডায়মন্ড হারবার পুলিশ ডিস্ট্রিক্টের অন্তর্ভুক্ত। 

বুধবার মহেশতলার রবীন্দ্র নগর থানার সামনেই পুলিশের বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। ভাঙচুর করা হয় স্থানীয় বাড়িগুলিতে। পাথর ছুড়ে ভাঙা হয় পুলিশের গাড়ির কাচও। বিভিন্ন বাড়ির ছাদ থেকে নাগাড়ে ইটবৃষ্টি হতে থাকে পুলিশের উপর। রাস্তার একধার থেকে পুলিশের দিকে বড় বড় পাথর ছুড়তে থাকে দুষ্কৃতীরা। পুলিশের তরফে টিয়ার গ্যাস অর্থাৎ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। তাতেও প্রথমে লাভ হয়নি কিছু। উল্টে পুলিশকে নতুন উদ্যমে আক্রমণ করতে শুরু করে উন্মত্ত দুষ্কৃতীরা। দোকান বসানো নিয়ে শুরু হয়েছিল সমস্যা। আর তার থেকেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় মহেশতলা। কার্যত বেশ কিছুক্ষণ সময়ের জন্য দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয় মহেশতলার রবীন্দ্র নগর থানা সংলগ্ন এলাকা। দুষ্কৃতীদের ইটবৃষ্টি, পাথর ছোড়ার সামনে কার্যত নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে পুলিশকে। প্রথমদিকে খুব বেশি সংখ্যক পুলিশ এলাকায় না থাকার ফলে, পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছুটা সময় লেগে গিয়েছে। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, পুলিশ কার্যত শাসকের মদতে নিষ্ক্রিয় থেকেছে মহেশতলায়। অন্যদিকে এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান সিপি মনোজ ভার্মা। 

পুলিশ সূত্রে খবর, মহেশতলায় বুধবার পাথরের আঘাতে আহত হয়েছেন ডিসি পোর্ট, রক্তাক্ত হয়েছেন লালবাজারের ট্রাফিক সার্জেন্ট। অনেক পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন ইট এবং পাথরের আঘাতে। হামলা চালানো হয়েছে পুলিশের বাসে। এমনকি হামলার হাত থেকে বাদ যায়নি পুলিশের কিয়স্কও। আপাতত বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন রয়েছে মহেশতলার ওই এলাকায়। রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বড় বড় ইট, পাথর। প্রচুর বাড়ির কাচ ভেঙেছে। ওষুধের দোকান, সেলুন, সাইকেলের দোকান, ছোটখাটো দোকান- ভাঙচুর করা হয়েছে সর্বত্র। তছনছ হয়ে গিয়েছে অসংখ্য দোকান। রেহাই পাননি পুলিশের মহিলাকর্মীরাও। স্থানীয় দোকানদারদের অনেকেই জানিয়েছেন দোকানের এত ক্ষতি হয়েছে যে আগামী কয়েকদিন আর দোকান খুলতে পারবেন না। ফলের দোকান কোথায় বসানো হবে তা নিয়ে শুরু হয় ঝামেলা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কার্যত তছনছ হয়ে যায় গোটা এলাকা।