অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা : ভয়ঙ্কর । বীভৎস । মর্মান্তিক মৃত্যু হল কংগ্রেস নেতার। গভীর রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তথা আইনজীবী নরেন্দ্রনাথ সাহার । বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। এই দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন আরও চারজন। সোমবার গভীর রাতে, মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার কনুয়া ভবানীপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। কিন্তু এই মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এটিকে দুর্ঘটনা বলে মানতে নারাজ পরিবার। তাদের দাবি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে পিষে মারা হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ আইনজীবীকে।
আইনজীবী নরেন্দ্রনাথ সাহা সোমবার ২টি বাইকে ৪ সঙ্গী নিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েছিলেন । আচমকাই একটি গাড়ি তাঁদের ধাক্কা মারে। গুরুতর জখম হন কংগ্রেস নেতা-সহ ৫ জনই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কংগ্রেস নেতাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক গাড়িটিকে আটক করে তদন্ত শুরু করেছে। পরিবারের ধারণা, এটি পরিকল্পিত হত্যা, কোনও দুর্ঘটনা নয়। স্থানীয়দের দাবি, আচমকা গাড়িটি এসে ধাক্কা মারায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান কংগ্রেস নেতা নরেন্দ্রনাথ। আহত চারজন হলেন শেখর সাহা, শশাঙ্ক সাহা, মনোজ কুমার দাস এবং পুলক সাহা।
মৃত কংগ্রেস নেতার স্ত্রীর দাবি, কয়েক বছর আগে খুন হন আরেক কংগ্রেস নেতা বিপদ প্রামাণিকের ভাই। ওই ঘটনায় অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী ছিলেন নরেন্দ্রনাথ সাহা। পুরনো শত্রুতা থেকেই খুন বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই নরেন্দ্রনাথ সাহা ও বিপদ প্রামাণিকের মধ্যে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছিল। এদিকে, আহতদের মধ্যে শেখর সাহা ও শশাঙ্ক সাহা – দু’জনেই স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের দাপুটে নেতা হিসেবে পরিচিত। ফলে এই ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।অভিযুক্ত বা কংগ্রেস নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। কীভাবে মৃত্যু, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যান চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় শেখর সাহাকে স্থানান্তর করা হয় শিলিগুড়িতে এবং শশাঙ্ক সাহাকে রায়গঞ্জের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। বাকি দু’জনের মধ্যে একজনকে মালদা মেডিকেল কলেজে এবং অপরজন রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন।