করুণাময় সিংহ, মালদা: এবার বাংলার স্কুলেও বন্দুকবাজ। পিস্তল, ছুরি, পেট্রোল বোমা নিয়ে চড়াও। পুরাতন মালদার স্কুলে পিস্তল, ছুরি, বোমা নিয়ে পড়ুয়াদের পণবন্দি করার চেষ্টা। জোড়া পিস্তল, ছুরি, বোতলভর্তি পেট্রোল-সহ অভিযুক্ত আটক। ঝাঁপিয়ে পড়ে বন্দুকবাজকে ক্লাস থেকেই আটক করলেন ডিএসপি। 


পুরাতন মালদার স্কুলে এমন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। ক্লাসরুমের ভিতর পিস্তল, ছুরি নিয়ে হামলা চালায় ওই ব্যক্তি। এরপরই  আগ্নেয়াস্ত্র সহ ওই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। ঘটনায় প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ছাত্রদের মধ্যে। ধৃত ব্যক্তির দাবি তাঁর ছেলে নিখোঁজ। ছেলেকে খুঁজে দিতে হবে বলেই তিনি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখাচ্ছেন। ওই ব্যক্তি এলাকারই বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধৃত ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন বলেও প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে পুলিশ।


এদিকে নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে, পড়ুয়া ভর্তি ক্লাসরুম থেকে বন্দুকবাজকে যেভাবে গ্রেফতার করলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ সার্ভিসের অফিসার, মালদার ডিএসপি আজহারউদ্দিন খান, তিনিই এখন 'হিরো'। যদিও এটা তাঁর কর্তব্য এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। বলেন, "আমরা তো পুলিশ অফিসার। আমাদের এটা ডিউটি ছিল।' 


কিন্তু কীভাবে করলেন এই অসাধ্যসাধন?


ডিএসপি বলেন, "আমাকে আমার এসপি স্যার বললেন এরকম একটা ঘটনা হচ্ছে। আমি তারপর আইসি-কে ফোন করলাম। আইসি কে ফোন করে সেখান থেকে বেরোলাম। আমরা ১০ মিনিট ড্রাইভ করে স্কুলটায় এলাম। এসে জানতে পারলাম ওইখানে এরকটি লোক অলমোস্ট ৭০ খানা বাচ্চাকে হোস্টেজ করে নিয়েছে। পুলিশের লোককে দেখলেই বলছে কেউ ঢুকবে না গুলি মেরে দেব।  আমাদের কোনও উপায় ছিল না। স্কুলের পিছনের দিকে একটা পাঁচিল আছে , সেখানে গিয়ে আমি একটি লোকের কাছ থেকে একটি টি শার্চ, চটি নি। এবং আমার ইউনিফর্মটা খুলে ফেলি। তারপর আমার বেল্টটা খুলি। একজন সিভিলিয়ন হিসাবে স্কুলে ঢুকি। আমার সঙ্গে এসআই দিলীপ হালদারকে নিয়ে ঢুকি। দিলীপ হালদারকে বলি আপনি এখানে থাকেন, আমি মিডিয়াম্যান সেজে যাচ্ছি। আমি মিডিয়াম্যান সেজে যাই, ওখানে দাঁড়িয়ে পড়ি। ও বুঝতে পারেনি আমি ডিএসপি (ডিএনটি) মালদা আছি। মোবাইলটা এমনভাবে সামনে রাখি ওর থেকে দূরে,ও যেন মনে করে ওরও রেকর্ডিং আমি মিডিয়াম্যান হিসাবে করছি। ফ্র্যাকশন অফ সেকেন্ডে আমি ঠিক করি আমাকে একটা টার্গেট নিতে হবে। এক দুই পা করে ওর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ি। ঝাঁপানোর পর ওকে আমি ক্যাপচার করে নিতে পারি, তারপর পিছনে আমাকে ব্যাকআপ করে। আমি ধরতে পারি। তারপর বাচ্চাদের রেসকিউ করে বের করে দেওয়া হয়।" 



আজহারউদ্দিনের তৎপরতায় প্রাণ ফিরে পেয়ে এখন বিস্মিত চোখে তাঁকে দেখছে খুদেরা।