করুণাময় সিংহ, অভিজিৎ চৌধুরী, ইংরেজবাজার: মালদার (Malda News) ইংরেজবাজারে (English Bazar Fire) বাজির দোকানে ভয়াবহ আগুন (Firecrackers Shop)। তাতে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে দু'জনের। পরের পর বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায় বলে স্থানীয়দের দাবি। দোকানে প্রচুর বাজি মজুত করা ছিল। আগুন ছড়াল আশপাশের চারটি দোকানে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন। ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে গোটা এলাকা। পাঁচ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও, এখনও নেভেনি আগুন। আগুন নেভাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এক দমকলকর্মীও।


মালদার ইংরেজবাজারের রথবাড়ি এলাকার নেতাজি পুর বাজারের ঘটনা। স্থানীয়দের দাবি, মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ আগুনের শিখা চোখে পড়ে। তপর পর বিস্ফোরণের শব্দ কানে আসে। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় দমকলকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে দোকানের শাটার ভাঙে দমকলবাহিনী। ভিতর থেকে উদ্ধার হয় এক ব্যক্তির ঝলসানো দেহ। পরে আরও একজনের মৃত্যুর খবর সামনে আসে। তাঁদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি এখনও। 


রথবাড়ি এলাকায় যে নেতাজি পুর বাজারের বাজির দোকানে আগুন লেগেছে, সেটি অত্যন্ত ঘিঞ্জি জায়গায় অবস্থিত। গায়ে গায়ে আরও দোকান রয়েছে। আগুন লাগার পর দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। চারটি দোকানে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। এত ঘিঞ্জি বাজারে এ ভাবে বাজি মজুত করা কি আদৌ বৈধ, উঠছে প্রশ্ন। ওই দোকানের লাইসেন্স ছিল কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। 


অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে এ দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছন ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। বাজির দোকানের লাইসেন্সের প্রশ্ন উঠলে, তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে নিশ্চিত নন তাঁরা। আপাতত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনাই লক্ষ্য। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গরমিল চোখে পড়লে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 


আরও পড়ুন: West Bengal Crackers Guidelines : বঙ্গে বৈধ-বাজি কী ? কোন কোন নিয়ম মেনে চলার কথা গাইডলাইনে ?


ইংরেজবাজারের এই ঘটনায় ফের পুলিশি নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। কারণ এই নিয়ে গত ছয় দিনে, রাজ্যের চার জেলায়, বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রাণ গেল ১৫ জনের।  এর পাশাপাশি বস্তা বস্তা বিস্ফোরকও উদ্ধার হয়ে চলেছে। প্রায় ৪০ হাজার কেজি বেআইনি বাজি উদ্ধার হয়েছে। তাতেই প্রশ্ন উঠছে যে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে কি বারুদের স্তূপে বাংলা?  এ নিয়ে চড়া সুরে আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধীরা। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও।


পশ্চিমবঙ্গে গ্রিন বাজির আওয়াজ ৯০ ডেসিবেলের মধ্যে হতে হয়। অন্য রাজ্য়ের ক্ষেত্রে গ্রিন বাজির শব্দ ১২০ ডেসিবেল। গ্রিন বাজিতে কী ধরনের মশলা ব্যবহার করা যাবে তা নিয়ে নির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের। ১৫ কেজি পর্যন্ত মশলা দিয়ে বাজি তৈরি করতে হলে, জেলা শাসকের থেকে অনুমতি নিতে হয়। ৫০০ কেজি পর্যন্ত মশলার বাজি তৈরি করতে কেন্দ্রীয় সরকারের কনট্রোলার অফ এক্সপ্লোসিভের অনুমতি লাগে। তার বেশি পরিমাণ বাজি তৈরির ক্ষেত্রে, অনুমতি নিতে হয় কেন্দ্রীয় সরকারের চিফ কনট্রোলার অফ এক্সপ্লোসিভের। একের পর এক বিস্ফোরণে প্রশ্ন উঠছে, এই নিয়ম খাতায় কলমেই থেকে যাচ্ছে না তো!