কলকাতা : একটা সপ্তাহও পেরোয়নি। পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipore) এগরায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের (Illegal Crackers Explosion) ভয়াবহতা কার্যত কাঁপিয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। একের পর এক দগ্ধ দেহের ছবি, শিরদাঁড়া দিয়ে হিমেল স্রোত বইয়ে দিয়েছিল। এগরার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ (Budge Budge)। বেআইনিভাবে মজুত বাজিতে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে নাবালিকা-সহ ৩ জনের। এর মাঝেই ফের বিস্ফোরণের ঘটনা সামনে এসেছে বীরভূমের দুবরাজপুরে। রাজ্যজুড়ে মজুত বেআইনি বাজি উদ্ধারে যারপর থেকেই প্রবল পুলিশি অভিযান, ধরপাকড় শুরু হয়েছে। উদ্ধার হচ্ছে হাজার হাজার কিলো বেআইনি বাজি। যা নিয়ে শুরু হয়েছে প্রবল রাজনৈতিক তরজাও। এর পরিস্থিতির মাঝেই একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক, বেআইনি ও বৈধ বাজির মধ্যে ফারাক ঠিক কোথায়। বঙ্গে বৈধ বাজি ঠিক কী, তা তৈরি করতে ঠিক কোন কোন গাইডলাইন মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court of India) নির্দেশ অনুযায়ী বর্তমানে একমাত্র গ্রিন বাজিই বৈধ। পশ্চিমবঙ্গে গ্রিন বাজির (Green Crackers) আওয়াজ ৯০ ডেসিবেলের মধ্যে হতে হয়। অন্য রাজ্য়ের ক্ষেত্রে গ্রিন বাজির শব্দ ১২০ ডেসিবেল। গ্রিন বাজিতে কী ধরনের মশলা ব্যবহার করা যাবে তা নিয়ে নির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের। ১৫ কেজি পর্যন্ত মশলা দিয়ে বাজি তৈরি করতে হলে, জেলা শাসকের থেকে অনুমতি নিতে হয়। ৫০০ কেজি পর্যন্ত মশলার বাজি তৈরি করতে কেন্দ্রীয় সরকারের কম্পট্রোলার অফ এক্সপ্লোসিভের অনুমতি লাগে। তার বেশি পরিমাণ বাজি তৈরির ক্ষেত্রে, অনুমতি নিতে হয় কেন্দ্রীয় সরকারের চিফ কম্পট্রোলার অফ এক্সপ্লোসিভের।
আরও পড়ুন- ৬ দিনে ৩ বিস্ফোরণে মৃত ১৪ ! বারুদের স্তূপে বাংলা?
প্রসঙ্গত, বেআইনি বাজির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে বজবজ, মহেশতলা, নোদাখালি ও কালীতলা আসুতি থানা এলাকায় ৪০ হাজার কেজি বেআইনি বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। বিস্ফোরণস্থলের অদূরে সেখানে গিয়ে দেখা গিয়েছে পুকুরময় বারুদের। যেখানে জলে ভাসছে বারুদ বোঝাই বস্তা। এদিকে পুলিশি অভিযানের প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন স্থানীয় বাজি ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন জায়গায় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। গাড়ি আটকানোর পাশাপাশি, ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন স্থানীয়রা। এলাকায় পুলিশের দেখা মেলেনি। ব্যবসায়ীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা বাজির ব্যবসা করছেন। এটাই তাঁদের রুজি-রুটি। এভাবে ধরপাকড় চললে তাঁরা পথে বসবেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন, আপনিও স্বাক্ষরের সময় এমন ভুল করেন, সাবধান, জেনে নিন সঠিক উপায়?