করুণাময় সিংহ, মালদা : মালদার (Malda) কালিয়াচকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। যার পরে সালিশি সভা বসিয়ে দেড়লক্ষ টাকার বিনিময়ে তৃণমূল (TMC) প্রধানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ-মামলা প্রত্যাহারের বিধান দিলেন তৃণমূল বিধায়ক। প্রশ্ন তুললেন নির্যাতিতার চরিত্র নিয়েও। বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিধায়ক পদ খারিজের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। এভাবে মামলা প্রত্যাহার করা যায় না, সাফাই তৃণমূলের।


বিতর্কে বিধায়ক


ধর্ষণের মতো ভয়ঙ্কর অভিযোগ। আর সেক্ষেত্রে কি না টাকার বিনিময়ে মিটমাট করে দেওয়ার চেষ্টা। দেড় লক্ষ টাকায় ‘ধর্ষণ’ মামলা প্রত্যাহারের বিধান দিয়ে। বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূলের মহিলা বিধায়ক। প্রশ্ন তুললেন নির্যাতিতার চরিত্র নিয়েও। মালদার কালিয়াচকে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।


ঠিক কী অভিযোগ


অভিযুক্ত তৃণমূল পরিচালিত বীরনগর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পল্টু মণ্ডল। নির্যাতিতার অভিযোগ, বছর পাঁচেক ধরে প্রধানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসও করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে কালিয়াচক থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়। 


নির্যাতিতার অভিযোগ, পরের দিন তৃণমূল বিধায়কের উপস্থিতিতে সালিশি সভা ডাকা হয়। সেখানে হাজির ছিলেন অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধান। তৃণমূল বিধায়ক সালিশিতে নির্যাতিতাকে দেড়লক্ষ টাকার বিনিময়ে ধর্ষণ-মামলা প্রত্যাহারের পরামর্শ দেন বলে অভিযোগ।


স্বীকার বিধায়কের


সালিশি সভা বসিয়ে ধর্ষণ-মামলা প্রত্যাহারের বিধান দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তৃণমূল বিধায়ক। বৈষ্ণবনগরের তৃণমূল বিধায়ক চন্দনা সরকার বলেছেন, 'গ্রাম্য বিবাদের মীমাংসা যেরকম হয় আর কি, সেরকমভাবে মীমাংসা হয়েছে এবং তাকে দেড়লক্ষ টাকা জরিমানা স্বরূপ ধরা হয়েছে।' প্রধানকে জরিমানা করা হচ্ছে জানিয়ে এভাবে কি আদৌ মিটমাট করা যায় জানতে চাইলে বিধায়কের উত্তর, 'এগুলোর বিচার তো আমাদের এলাকায় হয়েই থাকে। মেয়েটার চরিত্র সম্পর্কে যেটা জানলাম, ওঁর এরকম একটা অবৈধ সম্পর্ক নয়, ৩০৪ জায়গায় এরকম অবৈধ সম্পর্কে জড়িত আছেন মেয়েটি। এর আগেও কোনও টিচারের সঙ্গে এরকম ঘটনা করেছেন। মেয়েটা আর কি ভাল চরিত্রের নয়, খবর পেলাম।'


রাজনৈতিক চাপানউতোর


বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, 'এরা লুঠ করতে করতে এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, শরীর-টাকা কিছুই ছাড়ছেন না। যে বিধায়ক এই মন্তব্য করেছেন মমতার উচিত তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ করে নতুন করে ভোট করানো'। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেছেন, 'কেস রেজিস্টার হলে কেউ এভাবে মীমাংসা করতে পারে না, আদালত হস্তক্ষেপ করবে। বিধায়ক এটা করতে পারেন না। যদি পুলিশ যুক্ত থাকে সরকার ব্যবস্থা নেবে'। এই রাজনৈতিক চাপানউতোরের মাঝেই পলাতক ধর্ষণ-মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূলের প্রধান। 


আরও পড়ুন- রাজ্যে আরও ভয়াবহ ডেঙ্গি, কলকাতা-সল্টলেকে একদিনে ৩জনের মৃত্যু