জলপাইগুড়ি: বিসর্জনের সময় মাল নদীতে হড়পা বানে মৃত্যুর ঘটনার জেরে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মালবাজারের ক্যালটেক্স মোড়ে মৃতদের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা পথ অবরোধ করেন। তাঁদের অভিযোগ, আগেও মাল নদীতে হড়পা বান হওয়া সত্ত্বেও প্রশাসন কোনও সতর্কতা নেয়নি। উদ্ধারের সময় প্রশাসনের সহায়তা মেলেনি বলেও তাঁদের অভিযোগ। পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। প্রায় ১ ঘণ্টা পর পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।   


যে কোনও নদীর ঘাটে বিসর্জনের সময় নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে চলতে হয়। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে খবর, বিসর্জনের ঘাটে নৌকার ব্যবস্থা রাখতে হয়। রাখতে হয় পর্যাপ্ত সংখ্যায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এছাড়া লাইফ জ্যাকেট রাখতে হয়। মাইকে চালাতে হয় নিরন্তর প্রচার।  গাইডলাইনের ব্যানার রাখতে হয় ঘাটে।  বারাণসীতে যেমন বিসর্জনের জায়গা তার দিয়ে ঘেরা থাকে, তেমনই ঘিরে রাখতে হয় নদীর ওই অংশ।  জলপাইগুড়ির ক্ষেত্রে এই গাইডলাইন মানা হয়নি বলে অভিযোগ।  


জলপাইগুড়ির মাল নদীতে গতকাল প্রতিমা বিসর্জনের সময় ৮ জন সিভিল ডিফেন্সের কর্মী ছিলেন ঘটনাস্থলে। সিভিল ডিফেন্সের এক কর্মী জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে দড়ি ছাড়া কিছু ছিল না। বিপর্যয় যখন ঘটে, তখন যদি সিভিল ডিফেন্সের আরও কর্মী থাকতেন, তাহলে দ্রুত উদ্ধারকাজ করা যেত বলে তাঁর দাবি। 


এই বিপর্যয় নিয়ে স্থানীয় সূত্রে একটা সম্ভাবনার কথাও বলা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, নদীখাতে আগেই বোল্ডার ফেলা হয়েছিল, যাতে, যেদিকে বিসর্জন হবে, সেদিকে বেশি জল থাকে। হড়পা বানের সময় তা হিতে বিপরীত হয়েছে।  যেখানে বিসর্জন হচ্ছিল, সেদিকেই প্রবল স্রোত এসে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। 
কয়েকদিন আগেই এই নদীতে হড়পা বান হয়। তারপরও কেন বিসর্জনের সময় বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্ন উঠছে।  


এ নিয়ে ট্যুইট করে প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতা তথাগত রায়। তিনি ট্যুইটে লেখেন, জলপাইগুড়ির মালবাজারে প্রতিমা বিসর্জনের সময় হড়পা বানে ভয়াবহ দুর্ঘটনা দেখিয়ে দিল, রাজ্যে কর্মসংস্কৃতির অবনমন। এ রাজ্যে নেতারা মানুষকে শুধু দাবি করতে শিখিয়েছে, তার পরিবর্তে যে নিজের কাজটুকু মন দিয়ে করতে হবে, তা শেখায়নি। সিভিল ডিফেন্সের অধিকারীর আমতা আমতা জবাব তাই বোঝায়। 


পুজোর শহরে বেপরোয়া বাসের দৌরাত্ম্য! শিয়ালদা ফ্লাইওভারের ওপর, রেষারেষির করতে গিয়ে, পরপর পথচারীদের ধাক্কা মারল যাত্রীবাহী বাস। মৃত্যু হল ৩ জনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে আরও ৩ জন। দশমীর ভোরে, নিউটাউনে বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় এক আরোহীর। 


দশমীর রাতে বীভৎস দুর্ঘটনা! ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু তিনজনের! পুজোর আনন্দের রেশ কাটার আগেই স্বজন হারানোর বিষাদে ডুবল পরিবার।  দশমীর রাতে ঠাকুর দেখতে বেরনোর সময় পরিবারের সদস্যরা ভাবতেও পারেননি, এই শেষ দেখ। বুধবার রাত প্রায় দেড়টা নাগাদ  উত্তর কলকাতার দিকে ঠাকুর দেখতে গিয়েছিলেন, একবালপুরের বাসিন্দা, নন্দিনী প্রসাদ তাঁর বান্ধবী অদিতি গুপ্ত ও তাঁর মামাতো দাদা রাহুলকুমার প্রসাদ। প্রত্যেকের বয়স, ১৭ থেকে ৩০-এর মধ্যে।


নন্দিনী ক্লাস সেভেন এ পড়ত ও অদিতি ক্লাস টেনে। আর রাহুলের স্ত্রী মাত্র ১৩ দিন আগে, সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।  প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রাতে শিয়ালদা ফ্লাইওভার ধরে হেঁটেই যাচ্ছিলেন তাঁরা। তখনই রেষারেষি করতে করতে ধেয়ে আসে দু’টি বাস। একটি বাস পিছন দিক থেকে এসে পিষে দেয় পথচারীদের। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়, বছর ১৮-র অদিতি গুপ্তর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, রক্তাক্ত অবস্থায়, আহতদের নিয়ে NRS, SSKM’এর মতো একাধিক সরকারি হাসপাতালে ঘুরলেও প্রথমে কেউ ভর্তি নিতে চায়নি। শেষমেশ ভোরে আহতদের SSKM-এ ভর্তি করা হয়। কিন্তু, সেখানেও ঠিকমতো চিকিত্‍সা হয়নি বলে অভিযোগ।