অভিজিৎ চৌধুরী ও করুণাময় সিংহ, মালদা: এবার পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী বাছাই ঘিরেও প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। ব্লক নেতৃত্বের সামনেই দুই পক্ষের বচসা বাধে। নেতাদের দিকে তেড়েও যান কর্মীরা। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবমন্দির এলাকায় গতকাল এই ঘটনা ঘটে।


তৃণমূলের বুথ কমিটির বৈঠকে ঝামেলা তৈরি হয়। সেখানে নেতাদের সামনেই দুপক্ষের বচসা বাঁধে। একে অপরের দিকে তেড়ে যান। পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী বাছাই নিয়ে তৃণমূলের বুথ কমিটির বৈঠক চলাকালীন উত্তেজনা ছড়ায়। বিজেপির দাবি, শাসকদলে অনুশাসন নেই, তা এই ঘটনাতেই স্পষ্ট। তৃণমূল সাফাই দিয়েছে, দল বড় হচ্ছে, তাই অনেকেই প্রার্থী হতে চাইছে। 


বারবার গোষ্ঠীকোন্দল:
আর কদিন পরেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে নাম জড়িয়েছে শাসক দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের। এই পরিস্থিতিতে ভোটের আগে দল গোছানোর কাজ শুরু করেছে তৃণমূল। কিন্তু তার আগেই বিভিন্ন জেলায় সামনে এসেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি। কখনও কোচবিহার, কখনও উত্তরবঙ্গের অন্য কোনও জেলা। আবার কখনও বাঁকুড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো দক্ষিণবঙ্গের জেলা- তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি নতুন নয়। গত পঞ্চায়েত ভোটের সময়েও প্রকাশ্যে এসেছিল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের এমন ছবি। 


দলের মধ্যে কোন্দল থাকলে তা প্রার্থী বাছাইয়ের সময় বাইরে চলে আসে। এমন ঘটনা বারবার দেখা গিয়েছে। এবার মালদাতেও তেমনটাই দেখা গেল। নানা সময়ে মালদা তৃণমূলের অন্দরের কোন্দল সামনে এসেছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তা সামাল দেওয়া না গেলে সমস্যায় পড়তে পারে শাসক দল, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।



হাওড়ার (Howrh) বাঁকরা মন্ডলপাড়া এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব (TMC Clash) এবং মারামারি। জখম কয়েকজন। বাঁকড়া এক নম্বর পঞ্চায়েত প্রধান আখতার হোসেন মোল্লা ও পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল সামাদ গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। ভাঙড় একদা শক্ত ঘাঁটি, এখন কার্যত তৃণমূলের গলার কাঁটা। সেখানে লাগাতার অশান্তি, গত বিধানসভা নির্বাচনে আইএসএফের নৌশাদ সিদ্দিকির-এর কাছে পরাজয়। সব কিছুর নেপথ্য়ে অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে, তৃণমূলের তীব্র কোন্দলের তত্ত্ব। এই প্রেক্ষাপটেই আগামী পঞ্চায়েত ভোটের আগে, ভাঙড়ে সংগঠনের হাল ফেরাতে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে কড়া বার্তা দিল তৃণমূল নেতৃত্ব। ভাঙড় বিধানসভার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হল ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লার হাতে। সম্প্রতি তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির ভবানীপুরের বাড়ি লাগোয়া পার্টি অফিসে ডাকা হয় ভাঙড়ের তৃণমূল নেতাদের। ভাঙড়ের যে দুই নেতার মধ্যে বিবাদ বারবার শিরোনামে উঠে এসেছে সেই আরাবুল ইসলাম এবং কাইজার আহমেদকে এদিন পাশাপাশি হেঁটে বৈঠকে ঢুকতে দেখা যায়। এদিন সওকত মোল্লা বলেন, 'গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রোধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে, একত্রিত করা হবে, বুথ ভিত্তিক রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।' এবিষয়ে আরাবুল ইসলাম বলেন, “দল যা বলবে, সেইভাবে চলবে।' 


আরও পড়ুন: নৈহাটিতে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার পুরপ্রধানের ছেলে-সহ ২