করুণাময় সিংহ: রাজ্যজুড়ে তোলপাড়ের মাঝেই জেল থেকে ছাড়া পেলেন মালদাকাণ্ডের (Malda) দুই নির্যাতিতা। গতকাল মালদা জেলা আদালত দুই মহিলার জামিন মঞ্জুর করে। সন্ধে হয়ে যাওয়ায় জেল থেকে মুক্তি মেলেনি। আজ সকালে জামিনে মুক্ত দুই নির্যাতিতাকে মুক্তি দেয় জেল কর্তৃপক্ষ। জেল থেকে বেরিয়েই দুই নির্যাতিতার দাবি, ১৮ জুলাই ভরা হাটে চুরির মিথ্যা অপবাদে তাঁদের মারধর করা হয়। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে দুই নির্যাতিতার পরিবার। 


মালদার বামনগোলায় যে ভয়ঙ্কর বর্বরোচিত নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে, তার বর্ণনায় ও নিন্দায় কোনও শব্দই যথেষ্ট নয়। ২ মহিলাকে প্রকাশ্য়ে বিবস্ত্র করে মার! জুতোপেটা! মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানোর ঘটনায় যখন গোটা দেশ উত্তাল, সর্বত্র নিন্দার ঝড় তখনই বাংলার বুকে এমনই এক ভয়ানক নির্যাতনের অভিযোগ!


আরও নিন্দাজনক বিষয় হল, যাঁরা নির্যাতিত হলেন, তাঁদেরই গ্রেফতার করে জেলে পুড়ল বামনগোলা থানার পুলিশ। তবে, চুরির অপবাদে নয়,পুলিশ সূত্রে দাবি, ফাঁড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ২ জনকে।                  


যদিও, সোমবার, অর্থাৎ, গ্রেফতারির ৫ দিন পর ২ নির্যাতিতাকে জামিনের নির্দেশ দেয় মালদা জেলা আদালত। কিন্তু কী ঘটেছিল সেদিন? আদৌ কি পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুরে জড়িত ছিলেন দুই মহিলা?


না কি আসল ঘটনা ধামাচাপা দিতেই মিথ্য়া মামলায় ফাঁসানো হল দুজনকে?  ১৭ই জুলাই, অর্থাৎ সোমবার এক বিজেপি কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্য়ুর অভিযোগে নালাগোলা ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালায় বিজেপি। তারপর দিনই, অর্থাৎ, ১৮ জুলাই, মঙ্গলবার ঘটে সেই ভয়ঙ্কর ঘটনা। পরিবারের দাবি, হাটে লেবু বিক্রি করতে গেছিলেন দুই মহিলা। 


অভিযোগ, তখনই অপর এক মহিলার টাকার ব্য়াগ চুরির অভিযোগে তাঁদের বিবস্ত্র করে ভয়ানক মারধর করা হয়। পুলিশ সূত্রে দাবি, অভিযোগে বলা হয়েছে, সোমবার নালাগোলা ফাঁড়িতে ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত ২ মহিলা। 


তাই, মঙ্গলবার তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এ দিকে, পরিবার থেকে প্রতিবেশীএমনকি হাটের অন্য়ান্য় বিক্রেতা, প্রত্য়েকেরই দাবি,ফাঁড়ি ভাঙচুরের দিন সকাল ৮টায় ওই দুই মহিলাকে মথুরাপুর বাজারে দেখা গেছিল। তারপর ১১টায় তাঁরা বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর সারাদিন বাড়িতেই ছিলেন তাঁরা। আর তাই প্রশ্ন উঠছে, ফাঁড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হল কেন?