মালদা: পুজোর মুখে ফের ভাঙনের কবলে মালদার (Malda News) মানিকচকের (Manikchak) গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। গত কাল থেকে ঈশ্বরটোলা গ্রামে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে গঙ্গায় ভাঙন শুরু হয়েছে। নদী গর্ভে (Riverbed) তলিয়ে যাচ্ছে চাষের জমি, গাছপালা। পাড় ভাঙতে ভাঙতে ক্রমশ গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে গঙ্গা। মাথার ওপর ছাদ ও শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে ফেলার আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের। ভাঙন-কবলিত এলাকায় এখনও প্রশাসনের দেখা মেলেনি। 


প্রেক্ষাপট...
মালদা ও মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু এলাকায় গঙ্গা-ভাঙনের অভিঘাত অজানা নয়। এর জেরে কম-বেশি প্রত্যেক বছরই বহু মানুষ গৃহহীন হন, চাষের জমি থেকে গাছপালা হয়ে স্কুলবাড়ি বা বসতবাড়ি, গঙ্গার গ্রাসে এড়াতে পারে না কিছুই। গত মাসেই যেমন মালদার মানিকচকের ভুতনির চর এলাকায় ভাঙনের আতঙ্ক ছড়ায়। কয়েকশো মিটার অংশ জুড়ে ভাঙন চলতে থাকে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাঁধের একাংশ। এলাকা থেকে ফসল নিয়ে পালাতে বাধ্য হন স্থানীয় বাসিন্দারা। ভুতনির উত্তর চন্ডিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কালুটনটোলা ও কেশরপুরেও ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। এর আগে, গত বছর সেপ্টেম্বরের শুরুতেও এমন ভয়াবহ ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছিল মালদা। মূলত ভুতনির চরেই ভাঙন ধরায় গঙ্গা ও কোশি নদী। মানিকচকের পাশাপাশি গত বছর ভাঙন চলেছিল রতুয়াতেও। বিলাইমারি ও মহানন্দাটোলা এলাকায় কোশি নদীর পাড়ে ভাঙন ধরে। নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছিল কৃষি জমি। গঙ্গার পাশাপাশি রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছিল কোশি নদীও। যার জেরে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যায় মালদায়। গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে যায় বাঁধের ১০০ মিটার অংশ। মালদার মানিকচকের ভুতনির চরের কালুটন এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছিল। সেসময়ও অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন স্থানীয়রা। গ্রামবাসীদের দাবি ছিল, গঙ্গা গর্ভে বিলীন হয়ে যায় চার-চারটি বাড়ি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান সেচ দফতরের কর্মীরা।


মুর্শিদাবাদের ছবি...
দিন বারো আগে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জেও নতুন করে শুরু হয়েছে গঙ্গা ভাঙন। তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়ে যায়। সামশেরগঞ্জের মহেশটোলায় ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে রাজ্য় সরকারকে নিশানা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ফোনে কথা বলেন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রীর সঙ্গে। পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েনি রাজ্য়ের শাসক দলও। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের মহেশটোলা, প্রতাপগঞ্জ সহ বেশ কিছু এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে নতুন করে শুরু হয়েছে গঙ্গা ভাঙন। গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে জমি-বাড়ি। ঘরছাড়া বহু পরিবার। ওই এলাকার এক বাসিন্দা পিঙ্কি সাহা বলেন, “ভয় লাগছে। ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘুমোতে। ছেলে মেয়েও ভয় পাচ্ছে। তাও সাহস করে থাকছি। তাও ভয় লাগছে। যদি বালির বদলে পাথর দিয়ে জায়গাটা বাঁধিয়ে দেয়।’’
এসবের মধ্যে নতুন আতঙ্ক মানিকচকের ঈশ্বরটোলা গ্রামে।


আরও পড়ুন:কমবে বৃষ্টি, দুর্যোগ পেরিয়ে আজ দার্জিলিংয়ের আবহাওয়া কেমন?