করুণাময় সিংহ, মালদা: উন্নয়নমূলক কাজের নামে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। তৃণমূল পরিচালিত মালদার শ্রীপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছে ক্যাগ। আর এনিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। যদিও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী।
‘উন্নয়নের কাজ না করেই আত্মসাৎ করা হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। নিজের ছেলে ও আত্মীয়দের মাধ্যমে টাকা হাতিয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান।’ এই অভিযোগকে কেন্দ্র করেই শোরগোল পড়েছে মালদার রতুয়ার শ্রীপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। কাঠগড়ায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান সেরিনা বিবি।
গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, এলাকায় উন্নয়নমূলক কোনও কাজ না করেই কোটি কোটি টাকা তছরুপ করেছেন প্রধান। শ্রীপুর রতুয়ার বাসিন্দা সাজ্জাদ আলি বলেন, "কোনও কাজ না করে ছেলে এবং আত্মীয় স্বজনের নামে ঠিকাদারী লাইসেন্স করে কাজের বরাত দিয়ে সমস্ত টাকা লুট করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান, এই প্রধানের শাস্তি হওয়া উচিত।"
ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে ক্যাগ। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মামলাকারী ও স্থানীয় কংগ্রেস নেতা দাবি, তদন্তে সব দুর্নীতি প্রমাণিত হবে।
মামলাকারী ও কংগ্রেস নেতা মাসুদ আলম বলেন, "আদালতের নির্দেশে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে সিএজি, আইনের উপর ভরসা আছে, অভিযুক্তরা শাস্তি পাবেন।" তবে পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী, যিনি নিজেও এই এলাকার তৃণমূল নেতা, তিনি দুর্নীতির অভিযোগ নস্যাৎ করে, সব দায় বিরোধীদের ঘাড়ে চাপিয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী ও তৃণমূল নেতা মহব্বত আলি বলেন, "ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, সিএজি তদন্ত করছে আসল সত্য বেরিয়ে আসবে, অভিযোগের পেছনে মদত রয়েছে কংগ্রেস এবং বিজেপির।"
বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, "তৃণমূল পরিচালিত সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে তদন্ত হওয়া উচিত, বিজেপি কোনও ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত নয়, তদন্ত হলে আসল সত্য বেরিয়ে আসব।" মালদা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, "রাজ্যজুড়ে স্বচ্ছ প্রশাসন চালাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস, কেউ ব্যক্তিগতভাবে দুর্নীতি করলে তার সাথে দলের কোনও সম্পর্ক নেই, কোনও দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তির পাশে দল দাঁড়াবে না।" সব মিলিয়ে আর্থিক তছরুপের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সরগরম শ্রীপুর পঞ্চায়েত এলাকা।