করুণাময় সিংহ, মালদা : মালদায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগ তুললেন এক তৃণমূল সদস্যই। যদিও সমস্ত অভিভোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সভাপতি।
বন্যাত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে আগেই শিরোনামে উঠে এসেছিল মালদার তৃণমূল পরিচালিত হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি। এবার সেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধেই টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগ তুললেন তৃণমূলেরই এক সদস্য।
প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে খবর, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকে ৮টি প্রাথমিক স্কুল সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ হয়েছে ২৫ লক্ষ টাকা।
কিন্তু তৃণমূল সদস্য সুজাতা সাহার অভিযোগ, কোনও বৈঠক না ডেকেই গোপনে টেন্ডার ডেকেছেন সভাপতি কোয়েল দাস। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য সুজাতা সাহা বলেন, যাদের ভবন সংস্কার ও বৈদ্যুতিক কাজকর্মের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদের কাজের বরাত পাওয়ার কথা। কিন্তু যে সব ঠিকাদারদের কাজ দেওয়া হয়েছে তাদের সেই অভিজ্ঞতা নিয়েও সংশয় রয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও কয়েকজন সদস্য চক্রান্ত করে সরকারি টাকা নয়ছয় করতে টেন্ডার বিলিতে অনিয়ম করা হয়েছে।
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দলীয় সদস্যকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও তৃণমূল নেত্রী কোয়েল দাস বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। সুজাতা সাহা যে ভাবে অভিযোগ করছেন তাতে ওকে বিরোধী দলনেত্রী মনে হচ্ছে। উনি তৃণমূলে রয়েছেন নাকি কংগ্রেসে তা আগে জানাক।
গত বছর বন্যাত্রাণ বিলিতে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি কোয়েল দাস এবং সদস্য সুজাতা সাহা। আদালত থেকে আগাম জামিন পেয়েছিলেন সভাপতি। জামিন পাওয়ার পর সভাপতি, তাঁর সই জাল করে বন্যাত্রাণের টাকা আত্মসাৎ করছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূল সদস্য। এবার টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগ তুলে, সভাপতির বিরুদ্ধে বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
হরিশ্চন্দ্রপুরে টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগ। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অভিযোগ। তুঙ্গে তরজা । উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সম্পাদক রুপেশ আগরওয়াল বলেন, রাজ্য-জুড়ে দুর্নীতির খেলা চলছে। দলের লোকেরাই দলের বিরুদ্ধে বারবার দুর্নীতির অভিযোগ আনছেন। আগামী নির্বাচনে মানুষ জবাব দেবে।
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের হরিশ্চন্দ্রপুরের চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্ত বলেন, যদি টেন্ডার প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে কোনও অনিয়ম হয়, তাহলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে দলের কেউ জড়িত থাকলেও দল দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না। আমরা অবিলম্বে এ বিষয়ে ওই ব্লকের বিডিও সাহেবের সঙ্গে কথা বলব। যাতে টেন্ডার ক্যানসেল করা হয়।
বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগে চরমে বিতর্ক।