করুণাময় সিংহ, মালদা : গৃহবধূকে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিল মালদা জেলা আদালত। মৃত মহিলার স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করলেন মালদা জেলা আদালতের অ্যাডিশনাল ফাস্ট কোটের বিচারক মৌ চট্টোপাধ্যায়। দোষীদের শাস্তি হওয়ায় খুশি মৃত মহিলার বাপের বাড়ির লোকেরা।
২০১২ সালের ৪ মার্চ কালিয়াচক থানার চোরিঅনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজিবুল শেখ তার স্ত্রী ঝর্ণা বিবিকে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ ওঠে। তাঁর গায়ে কেরোসিন তেল ও আগুন ধরাতে সাহায্য করে বাবা ভোগ্গু শেখ, মা জোনাকি বিবি ও দুই বোন আসমানি বিবি ও আসিয়া বিবি। ঝর্ণা বিবি অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ছটপট করতে থাকলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু, অবস্থার অবনতি হতে থাকায় মালদা মেডিক্যালের চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতা রেফার করে দেন। কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে তাঁর মৃত্যু হয়। তার পরেই মৃত ঝর্ণা বিবির বাবা মোতায়ের শেখ অভিযুক্ত জামাই সহ তার পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। শুরু হয় ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া। অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে 498A,304B,302 ও 34 ধারাই মামলা রুজু করা হয়। প্রায় নয় বছর ধরে চলে ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া। ১৬ জনের সাক্ষী গ্রহণ করা হয় এই মামলায়। অবশেষে মঙ্গলবার অভিযুক্ত ৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে মালদা জেলা আদালত। চারটি ধারায় তাদের যাবজ্জীবন ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগে মালদাতেই স্ত্রীর শ্লীলতাহানি কটূক্তির প্রতিবাদ করায় স্বামীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল প্রতিবেশী এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে মানিকচক থানা এলাকায়।
মৃত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগ, বেশ কয়েক বছর ধরে ওই মহিলাকে উত্ত্যক্ত করত প্রতিবেশী যুবক প্রশান্ত মণ্ডল। এই নিয়ে গ্রামে বেশ কয়েকবার সালিশি সভা বসেছিল। এর পরও উত্যক্ত করা ছাড়েনি প্রশান্ত, বলে অভিযোগ। এরই প্রতিবাদ করেছিলেন স্বামী। সেই কারণেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। ঘটনায় মানিকচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।