অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা: চোরাশিকার ঠেকাতে এবং পর্যটকদের সুরক্ষার দিকে নজর দিতে সিসিটিভির ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হল মালদা জেলার  আদিনা ডিয়ার ফরেস্ট ( Adina Dear Forest )। শীতের মরশুমে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পরিযায়ী পাখিদের দল ভিড় শুরু করেছে এই আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে। আর এই সময় মূল্যবান পরিযায়ী পাখিদের ধরতেই চোরা শিকারিদের উৎপাত বেড়ে যায় বলে অভিযোগ। সেই দিকেই লক্ষ্য রেখে এই প্রথম গোটা আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে অন্তত ১০ টি সিসি ক্যামেরা (CCTV) বসিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে।


এছাড়াও শীতের মরশুমে পর্যটকদের ভিড় বাড়ে আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে। সেখানে থাকা হরিণ সহ অন্যান্য পশুদের ক্ষেত্রেও যাতে অবাঞ্ছিত কোনও রকম খাবার পর্যটকেরা দিতে না পারে সেদিকেও এই সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে তদারকি চালাবে বনদফতর।মালদার বিভাগীয় বনাধিকারিক জিজু জেসফার  জানিয়েছেন, আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে চোরাশিকারিদের উৎপাত ঠেকাতেই সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পাশাপাশি গোটা ডিয়ার ফরেস্টে পর্যটকদের গতিবিধির উপরেও  সিসি ক্যামেরার মাধ্যমেই নজরদারি রাখা হবে।


উল্লেখ্য, মালদার গাজোল ব্লকের পান্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কয়েক একর জমির ওপর অবস্থিত রয়েছে আদিনা ডিয়ার ফরেস্টটি। বর্তমানে এই ডিয়ার ফরেস্টে ১০০টি'রও বেশি চিতল সহ উন্নত প্রজাতির হরিণ রয়েছে। এছাড়াও নীলগাই, খরগোশ সহ বিভিন্ন ধরনের প্রাণী রয়েছে এই ডিয়ার ফরেস্টে। প্রতিবছর শীতের মরশুমে আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে দেশ-বিদেশের অসংখ্য পরিযায়ী পাখির দল বাসা বাঁধে এবং প্রজনন ঘটায়।


এছাড়াও আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে কয়েক বিঘা জমির ওপর রয়েছে একটি বিশাল বিল। সেখানেও বিভিন্ন ধরনের পাখিদের দল মাছ ধরতে আসে। আর এইসব পরিযায়ী পাখিদের ধরতেই তৎপর হয়ে উঠেছে চোরা শিকারিদের দল। এইসব পরিযায়ী পাখিগুলো ধরার পর সেগুলি খোলা বাজারে বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ ।সেই সব পাখির মাংসের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। ফলে আদিনা ডিয়ার ফরেস্টসংলগ্ন খাল, বিলে এখন পরিযায়ী পাখিদের ধরতেও মরিয়া হয়ে উঠেছে চোরাশিকারীরা বলে অভিযোগ। সেই পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রেখেই বনদপ্তর গোটা আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে।


আরও পড়ুন, স্বামীকে বেধড়ক মার দুষ্কৃতীদের, বন্ধ ঘর থেকে স্ত্রী শুনলেন গুলির আওয়াজ !


অপরদিকে, উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur) রায়গঞ্জে রয়েছে কুলিক পাখিরালয়। সাধারণত মে মাসের শেষ দিক থেকে পরিযায়ী পাখিরা ভিড় করে এখানে। নাইট হেরেন, ওপেন বিল স্টর্ক, কর্মরেন্ট এবং ইগ্রেট, মূলত এই চার পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে ওঠে কুলিক পাড়ের বনভূমি। প্রায় ছয় থেকে সাত মাস এখানেই আস্তানা গাড়ে পরিযায়ী পাখিরা। প্রজনন থেকে ছানাদের প্রাথমিক লালন পালন, সবকিছু এখানেই সম্পন্ন করে।  পৃথিবীর নানা দেশের উদ্দেশে পাড়ি দেয় পরিযায়ী পাখিরা। দীর্ঘ দিন ধরে এই রীতি মেনেই পরিযায়ী পাখিদের আসা যাওয়া চলে আসছে কুলিক পাখিরালয়ে। গত পাঁচ বছরে এখানে পাখির সংখ্যা ক্রমশই বেড়েছে। ফলে পরিবেশ প্রেমী মানুষের আনাগোনাও বেড়ে গিয়েছে একধাক্কায়। কিন্তু এবার উদ্বেগের ছবি সামনে এল।