করুণাময় সিংহ, চাঁচল : কাটমানির (Cut Money) অভিযোগে আগেও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। অভিযোগ উঠেছে একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। এবার কাটমানি না দেওয়ায় নবনির্মিত জলাধার (Newly Constructed Watar Tank) ভেঙে দিল দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গেছে মালদার (Malda) চাঁচল-১ নম্বর ব্লকের মকদমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আশ্বিনপুর গ্রামে। এনিয়ে ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন ঠিকাদাররা। এমনকি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ঠিকাদারদের তরফে। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হওয়ায় ক্ষুব্ধ পুলিশ প্রশাসনও। চাঁচল-১ বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে ৷ জলাধার ভাঙার সেই ঘটনার ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন দলবল নিয়ে শাবল দিয়ে নবনির্মিত জলাধারটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আশ্বিনপুর গ্রামের জল-সঙ্কট মেটাতে পানীয় জল প্রকল্পের জলাধার নির্মাণ করার কাজ শুরু হয়। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের তহবিল থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা বরাদ্দে হওয়া কাজ শেষের মুখে ছিল। তার আগেই এলাকার কয়েকজন সেটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল।
ঠিকাদারদের অভিযোগ, এলাকার মসলিম, মেহবুল, মাসুদ, সাদেক, সাহেব ও নজরুলরা সদলবলে জলাধারটি ভেঙেছে। একাজে বাধা দিতে গেলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এদিকে অভিযোগকারী ঠিকাদার জাহাঙ্গির আলির দাবি, জলাধার নির্মাণ করার সময় অভিযুক্তরা পাঁচ হাজার টাকা কাটমানির জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল। কাটমানি না দিলে জলাধার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তারা। সেইমতোই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। এনিয়ে ব্লক ও চাঁচল থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। পুলিশের কাছে তাদের গ্রেফতারির দাবিও জানিয়েছি।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার চাঁচল-১ নং ব্লক ঠিকাদার অ্যাসোসিয়েশন একজোটে বিক্ষোভ দেখায় ব্লক দফতরে। দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতারির দাবিতে সরব হয়েছেন ঠিকাদাররা।
ঘটনায় শাসকদলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বিজেপি। বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার সভাপতি অয়ন রায় বলেন, কাটমানি কে খায় সেটা রাজ্যের মানুষ ভালভাবে জানে। ওখানকার তৃণমূলের একাংশ কাটমানি না পেয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে।
যদিও পাল্টা জবাব দিয়েছেন চাঁচল-১ নং ব্লক তৃণমূল কমিটির সভাপতি শেখ আফসার আলি। তিনি বলেন, যারা ভেঙেছে তারা তৃণমূল, সেটা বিজেপি কী করে জানল। তবে যারা সরকারি সম্পতি নষ্ট করেছে, প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।