অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা: ঐতিহ্য বজায় রেখে প্রথা মেনে ধুমধাম করে আজও হয়ে আসছে গোবর্জনা কালীপুজো (Kali Pujo)। কথিত আছে এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দেবী চৌধুরানী (Devi Chaudhurani)। এক সময় ডাকাতরা ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে এখানে পুজো দিয়ে যেত। নদী পার্শ্ববর্তী জঙ্গলাকীর্ণ এলাকায় খড় দিয়ে তৈরি মন্দিরে হতো পুজো। বদলেছে সময়। খরস্রোতা নদী এখন শান্ত। জঙ্গলকীর্ণ এলাকা এখন জনবহুল। শুধু বদলায়নি মা কালীর পুজোর প্রথা।মালদা জেলার রতুয়া ২ নম্বর ব্লকের গোবর্জনা কালী মাতা ঠাকুরানি মন্দির। এই মন্দির প্রায় কয়েক হাজার বছরের পুরনো মন্দির।
জানা গিয়েছে,এই মন্দিরে আগে ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে ডাকাতরা কালী মাতার পুজো করে ডাকাতি করতে যেতেন। সেই সময় থেকেই শুরু হয় গোবরজর্নার কালীমাতার পুজো। তারপর থেকেই চৌধুরী পরিবারের সদস্যরা রীতিনীতি মেনে করে আসছেন কালীপূজো। আর মাএ হাতে গোনা কয়েকটা দিন বর্তমানে জোর কদমে চলছে মন্দিরের প্রস্তুতি। আরো জানা গেছে, এই কালীমন্দিরে প্রত্যেক শনিবার ও মঙ্গলবার দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন মায়ের পুজো দিতে। শুধু হিন্দু সম্প্রদায় মানুষ নয়, মুসলিমরাও এখানে এসে পূজো দেয়। পুজোর দিন থেকে শুরু হয় মেলা।আগামী দুই বছর কোরনার কালো দাপটে ভক্তদের সমাগম ছিল খুবই কম।এবার পরিস্থিতি অনেক ভালো এবছর কয়েক হাজার ভক্তদের সমাগম হবে। এই মন্দিরে পাঠা বলির রেওয়াজ রয়েছে।প্রায় কয়েক হাজার পাঠা বলি হয় বলে জানা গেছে।এ মুহূর্তে চলছে জোরদার প্রস্তুতি।
আরও পড়ুন, মানিকের বিরুদ্ধে এখনই কোনও কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবে না সিবিআই, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
পুজোর দায়িত্বে থাকা চৌধুরী পরিবারের শ্যামাপদ চৌধুরী বলেন, 'কয়েক হাজার বছরের পুরনো মন্দির। সম্পূর্ণ ইতিহাস আমাদের পূর্বপুরুষেরা জানতেন আমরা হয়তো পুরোটা জানি না। তবে দেবী চৌধুরানীর সঙ্গে জড়িত আছে এই মন্দির। আগেকার দিনে ডাকাতেরা এই মন্দিরে এসে পূজো দিত। বহু বছর ধরেই ধুমধাম করে হয় পুজো। শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গ নয় আশেপাশের রাজ্য থেকেও বহু মানুষ আছে পুজো দেওয়ার জন্য।বাংলার ইতিহাস এবং বাংলার বিভিন্ন সাহিত্যে আমরা বিভিন্ন কালীপূজার ইতিহাস পড়েছি। সে ইতিহাস যেমন ঐতিহ্যমন্ডিত তেমন রোমাঞ্চকর। সারা বাংলা জুড়েই কালীপুজোর বহু পুরনো ইতিহাস রয়েছে। সে রকম বেশ কিছু ঐতিহাসিক কালীপুজো আজও বর্তমান। তার মধ্যে একটি হল এই কালীপুজো।'