করুণাময় সিংহ, মালদা: ভয়াবহ ভাঙন (erosion) মালদায় (malda)। মানিকচকে (manikchowk) গঙ্গার তীরে ভাঙনের আতঙ্কে (fear) দিশাহারা স্থানীয়রা (residents)। কোথায় যাবেন, কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। 


কী পরিস্থিতি?
গত কাল বিকেল থেকেই গঙ্গার ভাঙনের ত্রাসে কাঁপছে মানিকচকের গোপালপুরের বালুটোলা। এর মধ্যেই নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা। তাণ্ডব চলছেই। ফুঁসে ওঠা নদীর রূপ দেখে আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। যদিও মালদাবাসীর অনেকের কাছেই এ কোনও নতুন ঘটনা নয়। দিনদশেক আগেই কালিয়াচকের তিন নম্বর ব্লকের পারলালপুর এলাকায় একই রকম ভাঙন দেখা দিয়েছিল।

ভাঙনের ভোগান্তি...
সেপ্টেম্বর মাসেও মালদায় ভূতনির চরে ভাঙন ধরাচ্ছিল গঙ্গা ও কোশি নদী।  মানিকচকের পাশাপাশি, ভাঙন শুরু হয় সেসময় রতুয়াতেও। বিলাইমারি ও মহানন্দাটোলা এলাকায়, ৭ দিন ধরে কোশি ( Kosi River )  নদীর পাড় ভাঙতে থাকে। নদীগর্ভে তলিয়ে যায় কৃষি জমি। গঙ্গার পাশাপাশি রুদ্রমূর্তি ধারণ করে কোশি নদীও। তার জেরে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যায় মালদায়।গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে যায় সেসময় বাঁধের ১০০ মিটার অংশ। মালদার মানিকচকের ভুতনির চরের কালুটন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।  আতঙ্কে বাড়িঘর  সরিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়া শুরু করেন স্থানীয়রা। গ্রামবাসীদের দাবি, গঙ্গা গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে চার-চারটি বাড়ি। খবর পেয়ে সেময় ঘটনাস্থলে  পৌঁছে যান সেচ দফতরের কর্মীরা। রাজ্যে গঙ্গার দ্বিতীয় বৃহত্তম চর ভূতনি। গঙ্গা, ফুলহার ও কোশি, এই ৩টি নদী ঘেরা ভূতনির চর। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কয়েকবছর কোশি নদীতে ভাঙন হয়নি। কিন্তু, গতমাসে ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। ৭টি গ্রাম যে কোনও মুহূর্তে নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়। সর্বস্ব খুইয়ে ফেলার আগেই বাড়ির ইট, কাঠের দরজা, জানলা খুলে নিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়া শুরু করেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা। তবে কালিয়াচকের ঘটনাটি পুজোর পরে ঘটেছে। ভাঙ্গনের জেরে পারলালপুর এলাকার মন্দিরের একাংশও তলিয়ে যায়। বিপর্যয় নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনীতি । তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে চলছে দায় ঠেলাঠেলি। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে, আতঙ্কে নিরাপদ দূরত্বে সরে যাওয়ার তোড়জোড় করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। জেলাশাসকের আশ্বাস, দ্রুত ভাঙন রোধের কাজ হবে। 
কিন্তু ঘটনা হল, এই ছবি নতুন নয়। তার পরও ভাঙন রোধে এত দিন কেন কিছু করেনি প্রশাসন? প্রতি বছর গঙ্গা ফুঁসে ওঠায় বহু মানুষ ঘরবাড়ি হারান এখানে, সর্বস্বান্তও হন। কেন টনক নড়ে না কারও? খেদ বাড়ছেই।


আরও পড়ুন:ক্যানিংয়ে আক্রান্ত সিভিক ভলান্টিয়ার, আত্মীয়ের সঙ্গে বচসার জেরেই কি হামলা?