করুণাময় সিংহ, মালদা : একবিংশ শতকেও কুসংস্কারের অন্ধকার। অন্তঃসত্ত্বাকে (Pregnant Lady) চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে গিয়ে বাড়িতে ওঝা ডেকে ঝাড়ফুঁক। সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা মহিলা বেশ কয়েক দিন ধরে অসুস্থ। সুস্থ করতে চিকিৎসকের (Doctor) পরামর্শ না নিয়ে ওঝা ডেকে ঝাড়ফুঁক করানোর অভিযোগ পরিবারের বিরুদ্ধে। মালদার (Malda) ভূতনির ঘটনা। পুলিশের (Police) হস্তক্ষেপে মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে (Hospital) ভর্তি করলেন চিকিৎসকরা। সঞ্জয় ভগত নামে অভিযুক্ত ওঝাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মালদার ভূতনির বাসিন্দা ৭ মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা গত কয়েকদিন ধরে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। তাঁকে সারিয়ে তুলতে পরিবারের সদস্যরা এক ওঝাকে নিয়ে আসেন। বাড়ির উঠোনেই চলে ঝাড়ফুঁক। ভাইরাল হয় ভিডিও। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ।
ঘটনার কথা জানতে পেরে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। আসে ভূতনি থানার পুলিশ ও চিকিৎসকরা। অসুস্থ মহিলাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় হাসপাতালে। অন্তঃসত্ত্বার পরিবারের সাফাই, চিকিৎসককে দেখিয়ে লাভ না হওয়ায় ওঝাকে ডাকা হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, যে সমস্যার জন্য জ্ঞান হারাচ্ছিলেন মহিলা, তা চিকিত্সাতেই সারে। তুকতাকে নয়। ভূতনি গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক রাজেশ কুমার সাহা বলেছেন, 'আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। উদ্ধার করে আনি। রক্তাল্পতার জন্য অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে ।'
আরও পড়ুন- পুরুলিয়ার গাড়াফুসরোতে ডাইনি অপবাদে এক মহিলাকে খুনের হুমকির অভিযোগ
এদিকে, কিছুদিন আগেই সাপের কামড়ে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে গিয়ে ওঝার বাড়িতে নিয়ে ঝাড়ফুঁক করার ফলে দুই যুবকের মৃত্যু হয়। আর এই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসে দেগঙ্গা ব্লক প্রশাসন। দেগঙ্গা থানা ও ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মানুষকে সাপে কামড়ালে কি করনীয়, সেই বিষয়ে মাইকে করে প্রচার শুরু করে। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ভিআরপি, ভিসিডি কর্মীদেরকে দিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে সচেতন করা হয়। জানানো হচ্ছে যে, সাপে কামড়ানোর পর ওঝার বাড়িতে না নিয়ে গিয়ে রোগীকে সরাসরি হাসপাতালে যেতে হবে। গুরুত্ব নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।