করুণাময় সিংহ ও অভিজিৎ চৌধুরী, হরিশ্চন্দ্রপুর : নিয়ম নীতির বালাই নেই। ধুলো রাস্তার ওপরেই পিচ ঢেলে হচ্ছে দায়সারা সংস্কার (Repair)। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে (Malda Harischandrapur) এমনই অভিযোগ তুলে রাস্তার মেরামতির কাজ বন্ধ করে দিলেন গ্রামবাসী। এ নিয়ে তৃণমূলকে কাটমানি-খোঁচা দিয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে দুর্নীতি করলে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল।


এ কেমন সংস্কার ?


এভাবে মেরামত করলে কতদিন ঠিক থাকবে রাস্তা ? চেনা দুর্ভোগ তো আবার ফিরবে ! মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে এমনই অভিযোগ তুলে রাস্তা মেরামতির কাজ বন্ধ করে দিলেন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে চলল বিক্ষোভ। 


২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের হরদমনগর থেকে দৌলতপুর পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার এই রাস্তা। আগের পিচ উঠে গিয়ে অবশিষ্ট ছিল শুধু মাটি, ধুলো আর ছোট ছোট পাথর ! সম্প্রতি জেলা পরিষদ তহবিল থেকে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ার পর শুরু হয় এই রাস্তা ও পাশের একটি সেতু মেরামতি। আর সেখানেই উঠেছে অভিযোগ ! গ্রামবাসীর দাবি, আগের ধুলো রাস্তার ওপরে, দায়সারাভাবে পিচ দিয়ে রোলিং করে দেওয়া হচ্ছে। 


হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা মণিরুল আজিজ বলেন, প্রচণ্ড অনুন্নত মানের রাস্তার কাজ হচ্ছে। কাদামাটির উপর পিচ ঢেলে দিচ্ছে। এর আগে ঠিকাদারকে বললেও ঠিকাদার পাল্টা হুমকি দিয়েছে, প্রশাসনকে এনে কাজ করব, কেউ বন্ধ করতে পারবে না। আমরা এভাবে কাজ হতে দেব না।


এই রাস্তা সংস্কারের টেন্ডার পেয়েছেন রায়গঞ্জের ঠিকাদার গোবিন্দ সাহা। তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও, রাস্তার সংস্কারের কাজে যুক্ত কর্মীদের দাবি, নিয়ম মেনেই কাজ চলছে। ঠিকাদার সংস্থার কর্মী মজিবুর রহমান বলেন, আমরা শিডিউল মেনেই কাজ করছি। কিন্তু এলাকাবাসী প্রতিবাদ করায় কাজ বন্ধ হয়ে গেল।


পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে, রাস্তা সংস্কার নিয়ে গ্রামবাসীর এই বিক্ষোভের আঁচ লেগেছে জেলা রাজনীতিতেও। উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, ঠিকাদারদের কিছু করার নেই, যেভাবে তাঁদেরকে কাটমানি দিতে হচ্ছে তৃণমূল নেতাদের। তাই নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। এখন তৃণমূলের নিচু তলার কর্মীরাই বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের সময় তৃণমূল নেতারা জনগণের কাছে গেলে জুতো পেটা করবে।


অন্যদিকে, মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান বলেন, রাস্তার কাজে বেনিয়ম হয়েছে আমরা কয়েক দিন ধরেই খোঁজ পাচ্ছি। আমাদের নেত্রী বলে দিয়েছেন কোনও রকম দুর্নীতি বরদাস্ত হবে না। যত টাকা বরাদ্দ হবে তত টাকার কাজ করতে হবে। যদি ঠিকাদার দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


গ্রামবাসী কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় এদিন ফিরে যান ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা। 


আরও পড়ুন ; ধাক্কা শাসক শিবিরে, হরিশ্চন্দ্রপুরে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান ৫০০-র বেশি নেতা-কর্মীর