করুণাময় সিংহ , মালদা: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই মালদায় তৃণমূল নেতা খুন? স্ক্যানারে আরেক নেতা। মালদার তৃণমূল নেতা নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে পুলিশের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ। মালদা তৃণমূলের শহর সভাপতির ২ ভাইকেও পুলিশের তলব। বেলা ১২টা থেকে ইংরেজবাজার থানায় তৃণমূল নেতা-সহ ৩জনকে জিজ্ঞাসাবাদ। নরেন্দ্রনাথের সঙ্গে ভাই ধীরেন্দ্রনাথ, অখিলেশকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ। দুলাল সরকার খুনে আমাদের কেউ জড়িত নন, দাবি ধীরেন্দ্রনাথের।
দীর্ঘদিন ধরে রেকির পর, পরিকল্পনামাফিক মালদার জেলা তৃণমূল সহ সভাপতি দুলাল সরকারকে খুন করে সুপারি কিলাররা! তদন্তে নেমে এমনটাই দাবি করছে পুলিশ। কিন্তু মূল প্রশ্ন হল, তৃণমূল নেতাকে খুনের সুপারি দিল কারা? কী কারণে খুন? মালদায় তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনেও সামনে এল বিহার যোগ। বিহার থেকে গ্রেফতার করা হল সুপারি কিলারকে। এই নিয়ে একাধিক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ইংরেজবাজারে তৃণমূল নেতাকে খুনের পর, মানিকচক হয়ে বিহারে পালিয়ে যাওয়ার ছক কষেছিল দুষ্কৃতীরা। ১ জন বিহারে পালিয়ে যেতে পারলেও, পালানোর সময়ই ২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, এই সমস্ত খুনের পিছনে প্রোমোটাররাজ আছে। আপনি ঘরের মধ্য়ে খুঁজুন, বাইরে খুঁজে লাভ নেই। বিহার থেকে, ঝাড়খণ্ড থেকে টাকা না দিলে কেউ আসে না। টাকা দেওয়ার ক্ষমতা কাদের আছে? পশ্চিমবঙ্গের যারা তৃণমূলের বড় বড় কর্তা, বড় বড় মাফিয়া, নোট খরচ করার ক্ষমতা তাদের আছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মালদার তৃণমূল নেতাকে খুনের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করা হয়েছিল অনেকদিন আগে থেকেই। প্রায় ১৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে মালদায় ঘাঁটি গেড়েছিল সুপারি কিলাররা। ক্রিসমাস কার্নিভাল চলাকালীনই তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু কার্নিভালে বহু মানুষের জমায়েতের কারণে ভেস্তে যায় খুনের ছক। তৃণমূল নেতার প্রত্যেক মুহূর্তের গতিবিধি রেকি করতে থাকে দুষ্কৃতীরা।
তিনি কোথায় যান? কখন যান? পুরোটাই নখদর্পণে চলে এসেছিল সুপারি কিলারদের। প্রতিদিন মহানন্দা পল্লির বাড়ি থেকে বেরিয়ে কানির মোড়ে নিজের কার্যালয়ে যেতেন দুলাল সরকার।
এরপর সেখান থেকে যেতেন মহানন্দা পল্লিতে তাঁর পাইপ ফ্যাক্টরিতে। সেখান থেকে ফিরে আসতেন কানির মোড়ে নিজের কার্যালয়ে। আর দিনের মধ্যে একমাত্র এই সময়টাই একা থাকতেন দুলাল সরকার।
কখনও নিজে স্কুটি চালিয়ে যেতেন, কখনও আবার যাতায়াত করতেন নিজের গাড়িতে। সঙ্গে থাকতেন গাড়ির চালক। আর তৃণমূল নেতার দৈনন্দিন এই রুটিন কার্যত জলের মতো মুখস্থ হয়ে গেছিল সুপারি কিলারদের কাছে। বৃহস্পতিবার সকালে এই সুযোগটাই নেয় দুষ্কৃতীরা। দৌড়ে পালিয়ে দোকানের ভিতর ঢুকে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করেন তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার। তাঁকে ধাওয়া করে দোকানে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরাও। মৃত্যু নিশ্চিত করতে, তৃণমূল নেতার মাথায় গুলি করা হয়। আর এরপরই প্রশ্ন উঠছে, ২ সপ্তাহ ধরে এলাকায় সুপারি কিলার ঘোরাঘুরি করলেও, কোনও খবরই পেল না পুলিশ!
আরও পড়ুন, BJP নেতা অর্জুনকে ফের তলব, টেন্ডার দুর্নীতির তদন্তে প্রাক্তন সাংসদের পুত্রেরও পড়ল ডাক
পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'ডিজি-কে বলেছেন যে এটা স্পেশালভাবে ইনভেস্টিগেশন করে পিছনে কে আছে সেটা বের করতে। আমার নেতা বাবলা সরকারকে যেভাবে খুন করা হয়েছে, পিছনে যেই থাকুক তাকে বের করতে হবে। এটা আমাদের ডিমান্ড। 'খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।