মালদা: মালদায় তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনের ঘটনার পর নিরাপত্তা বাড়ানো হল রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেনের, অন্যদিকে আতঙ্কে ভুগছে শাসকদলের নেতা-নেত্রীরাও। তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দল। মোটা টাকা খাওয়া নিয়ে কোন্দল। এবার বিরোধীদের মন্তব্যকে সমর্থন করে বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূলেরই সাধারণ সম্পাদক তথা মালদা জেলা পরিষদ সদস্যের।
তৃণমূল নেতা বুলবুল খানের বক্তব্য, তৃণমূলের মধ্যে যে গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে, বিরোধীদের এই অভিযোগকে তিনি সমর্থন করেন। এমনিতেই মালদায় আতঙ্কে ভুগছেন নেতারা। বিশেষ করে বিহার লাগোয়া এলাকা হরিশ্চন্দ্রপুরে আতঙ্ক আরও বেড়েছে। এই এলাকারই বাসিন্দা প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেনের নিরাপত্তা আরও বেড়েছে। এই নিয়ে এই এলাকার অন্য নেতা-নেত্রীদের ক্ষোভ আর ভয় দুই বেড়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্যা মর্জিনা খাতুনের বক্তব্য, তিনি খুব আতঙ্কে আছেন। নিরাপত্তারক্ষীর জন্য আবেদন করে ছিলাম জেলা পুলিশ সারা দেয়নি। শুধু মন্ত্রীর নিরাপত্তা বেড়েছে শুনেছি। শাসকদলকে আক্রমণ করেছে বিজেপি, সিপিএম। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
দীর্ঘদিন ধরে রেকির পর, পরিকল্পনামাফিক মালদার জেলা তৃণমূল সহ সভাপতি দুলাল সরকারকে খুন করে সুপারি কিলাররা! তদন্তে নেমে এমনটাই দাবি করছে পুলিশ। কিন্তু মূল প্রশ্ন হল, তৃণমূল নেতাকে খুনের সুপারি দিল কারা? কী কারণে খুন? মালদায় তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনেও সামনে এল বিহার যোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, মালদার তৃণমূল নেতাকে খুনের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করা হয়েছিল অনেকদিন আগে থেকেই। প্রায় ১৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে মালদায় ঘাঁটি গেড়েছিল সুপারি কিলাররা।
ক্রিসমাস কার্নিভাল চলাকালীনই তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু কার্নিভালে বহু মানুষের জমায়েতের কারণে ভেস্তে যায় খুনের ছক। তৃণমূল নেতার প্রত্যেক মুহূর্তের গতিবিধি রেকি করতে থাকে দুষ্কৃতীরা। তিনি কোথায় যান? কখন যান? পুরোটাই নখদর্পণে চলে এসেছিল সুপারি কিলারদের। প্রতিদিন মহানন্দা পল্লির বাড়ি থেকে বেরিয়ে কানির মোড়ে নিজের কার্যালয়ে যেতেন দুলাল সরকার।এরপর সেখান থেকে যেতেন মহানন্দা পল্লিতে তাঁর পাইপ ফ্যাক্টরিতে। সেখান থেকে ফিরে আসতেন কানির মোড়ে নিজের কার্যালয়ে। আর দিনের মধ্যে একমাত্র এই সময়টাই একা থাকতেন দুলাল সরকার।
কখনও নিজে স্কুটি চালিয়ে যেতেন, কখনও আবার যাতায়াত করতেন নিজের গাড়িতে। সঙ্গে থাকতেন গাড়ির চালক। আর তৃণমূল নেতার দৈনন্দিন এই রুটিন কার্যত জলের মতো মুখস্থ হয়ে গেছিল সুপারি কিলারদের কাছে। বৃহস্পতিবার সকালে এই সুযোগটাই নেয় দুষ্কৃতীরা। দৌড়ে পালিয়ে দোকানের ভিতর ঢুকে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করেন তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার। তাঁকে ধাওয়া করে দোকানে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরাও। মৃত্যু নিশ্চিত করতে, তৃণমূল নেতার মাথায় গুলি করা হয়।
আরও পড়ুন, ১ কোটির টার্গেট, অর্ধেকের আগেই আটকে গেল বঙ্গ BJP