শুভেন্দু ভট্টাচার্য, রাজা চট্টোপাধ্যায় ও কৌশিক গাঁতাইত, মালদা: মালদার পর কোচবিহার, ফের সীমান্তে বাংলাদেশের উস্কানি। মেখলিগঞ্জে সীমান্তেও BSF-কে কাঁটাতার দিতে বাধা BGB-র। কাঁটাতার দিতে ভারতকে BGB-র সঙ্গে বাংলাদেশিদের বাধা! কাঁটাতারহীন সীমান্ত দিয়ে অবাধে গরু পাচারের অভিযোগ। অবাধে পাচারের সুযোগ দিতেই কাঁটাতারে ইউনূস সরকারের আপত্তি? বাংলাদেশের লাগাতার প্ররোচনাতেও সীমান্ত রক্ষায় অবিচল BSF! যুদ্ধের জিগিরের মধ্যেই অনুপ্রবেশ, পাচারে ইউনূস সরকারে মদত? 

Continues below advertisement

মালদার বৈষ্ণবনগরের পর এবার কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ। ফের সীমান্তে উস্কানি বাংলাদেশের। কাঁটাতার লাগানো নিয়ে ফের বিএসএফ-বিজিবির সংঘাত। দু-দেশের সীমান্তে ফের স্লোগান তুললেন স্থানীয়রা। চাপের মুখে শেষমেশ পিছু হঠতে বাধ্য হল বাংলাদেশের সেনাবাহিনী। মেখলিগঞ্জের দহগ্রাম আঙরাপোতা সীমান্তের এই এলাকা ৩ বিঘা করিডর বলে পরিচিত।

বাংলাদেশের পাটগ্রাম জেলার ভূখণ্ডের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ভারতের দহগ্রাম আঙরাপোতা। কিন্তু এতদিন এখানে কোনও কাঁটাতারের বেড়া ছিল না। শুক্রবার বিএসএফ জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে গ্রামবাসীরা নিজেরাই অস্থায়ীভাবে কাঁটাতার লাগানো শুরু করেন। তখনই কাজ বন্ধ করতে বলে হম্বিতম্বি শুরু করে বিজিবি । যদিও বিএসএফের আধিকারিকরা আসতেই গুটিয়ে যায় বিজিবি। চাপের মুখে পিছু হঠতে বাধ্য হয়।

Continues below advertisement

মেখলিগঞ্জর বাসিন্দা বিনয়কৃষ্ণ রায় , কাজ করার সময় বাধা এসেছিল। পাবলিকও কিছু বাধা দেয়। বাংলাদেশের পাবলিক। আমাদের দেশ ভারতবর্ষ। আমরা ১ ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নই। তবে বিকেল পর্যন্ত কাঁটাতারের ১০০ মিটার দূরে জমায়েত করে থাকে বিজিবি ও সে দেশের স্থানীয় বাসিন্দারা। ওপার থেকে ওঠে স্লোগান। এপারে পাল্টা স্লোগান তোলেন মেখলিগঞ্জের বাসিন্দারা। কিন্তু বারবার সীমান্তে ফেন্সিং করতে বাধা দিচ্ছে কেন বিজিবি? ভারতের ভূখন্ডে বেড়া দিলে বাংলাদেশের কি অসুবিধা? চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলছেন সীমান্তের বাসিন্দারা। 

মেখলিগঞ্জের বাসিন্দা বিনয়কৃষ্ণ রায় বলেন, 'সরাসরি বাংলাদেশ থেকে চুরি,গরু-মহিষ গোয়াল ঘর থেকে অন্য়ায়ভাবে ওরা নিয়ে যেত। ওদের পিছনে আমরা ধাওয়া করি। কিন্তু, তারপরেও গরু পাওয়া মুশকিল। সোজা চলে যায় বাংলাদেশ। এখান থেকে দলে দলে গরু, দলে দলে মানুষ পাচার হয়। কোন মানুষ কী ধরনের, সেটা তো বলা মুশকিল। আমরা ঘেরার ব্য়বস্থা করি। BSF আমাদের মদত করে।' দহগ্রাম আঙরাপোতা সীমান্তের প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা কাঁটাতারহীন। যার সুযোগ নিয়ে অনুপ্রবেশ, গরুপাচারের মতো বেআইনি কাজ চলত রমরমিয়ে। তা বন্ধ হয়ে যাবে বলেই কি সীমান্তে ফেন্সিংয়ে আপত্তি তুলছে বিজিবি? ইউনূস সরকার যে পরোক্ষভাবে পাচারে মদত দিচ্ছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার কথাতেও তা স্পষ্ট হয়ে গেছে।' 

আরও পড়ুন, টার্গেট ১ কোটি, সময় বাড়িয়েও অর্ধেক পূরণে ব্যর্থ BJP ! 'মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ..'

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী বলেন, গরুচোর ব্য়াতীত এইখান দিয়ে যদি অন্য় কোনওরকমের ক্ষেত্রে আমরা কিন্তু সীমান্তে কোনওরকমের ছাড় দেব না। এই ১৫ বছরে কিন্তু তারা বহু সুবিধা নিয়ে নিয়েছে আমাদের থেকে। এখন যেহেতু তারা সুবিধা পাচ্ছে না দেখে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা করছে। এই প্রেক্ষাপটে কখনও মালদা, কখনও কোচবিহারে, বারবার সীমান্ত ঘিরতে বাধা দিচ্ছে বিজিবি। মালদার বৈষ্ণবনগরেও সীমান্তে ফেন্সিং শুরু করায় মঙ্গলবার চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। দফায় দফায় ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের পরও বন্ধ হয়নি উস্কানি। যার জেরে আপতত সেখানে কাজ বন্ধ রেখেছে বিএসএফ।