করুণাময় সিংহ, কালিয়াচক : মালদায় ফের শ্যুটআউট। দুলাল সরকার-খুনের ১২ দিনের মাথায় ফের মালদায় তৃণমূলকর্মী খুন ! রাস্তার শিলান্যাস করতে গিয়েও চলল গুলি, তৃণমূলকর্মী খুন ! তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি-সহ আরও ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অভিযোগ, এলাকা দখলের লড়াই ঘিরে ফের তৃণমূল বনাম তৃণমূলের এই ঘটনা! ঘটনায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ-সহ ২ জন সঙ্কটজনক। অভিযুক্ত তৃণমূলকর্মী জাকির শেখ। তৃণমূল কর্মী জাকিরের সঙ্গে বকুল শেখের বিবাদের জেরেই এই হামলার ঘটনা বলে অভিযোগ উঠেছে। কালিয়াচকে ভিড়ে ঠাসা তৃণমূলের অনুষ্ঠানেই গুলি করে চম্পট দেয় আততায়ীরা ! ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের কাছেই সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের হামলা। এলোপাথাড়ি গুলির পরে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে তৃণমূলকর্মীকে খুন করা হয়।

Continues below advertisement

কী ঘটনা ?

দুলাল সরকার হত্যাকাণ্ডের এখনও দুই সপ্তাহ অতিক্রান্ত হয়নি। তারমধ্যেই আর এক তৃণমূল নেতা গুলিবিদ্ধ হলেন। আজ সকালে শ্যুটআউটের ঘটনা ঘটেছে কালিয়াচকের নয়াবস্তি এলাকায়। অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ এবং তাঁর সঙ্গীরা গিয়েছিলেন একটি রাস্তার কাজে শিলান্যাস করতে। সেই সময় বকুল শেখকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, বাইকে করে এসে বকুল শেখকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে। অঞ্চল সভাপতি ছাড়াও আরও দুই তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। বকুল শেখের অবস্থা সংকটজনক। কে বা কারা গুলি চালাল তা তদন্ত করে দেখছে কালিয়াচক থানার পুলিশ। পুরো এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে।

Continues below advertisement

দুলাল সরকার হত্যাকাণ্ড-

নতুন বছরের দ্বিতীয় দিন, বাড়ির সামনে গুলি করে খুন করা হয় মালদার জেলা তৃণমূল সহ সভাপতি দুলাল সরকার ওরফে বাবলাকে। প্রকাশ্যে ধাওয়া করে তৃণমূলের দাপুটে নেতাকে গুলি করে খুন করা হয়! ঠিক কী হয়েছিল সেই সময় ? বিভীষিকাময় সেই মুহূর্তের কথা, এবিপি আনন্দের সামনে তুলে ধরেন নিহত তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারের গাড়ির চালক সুমন রায়। তিনি জানান, ২ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রতিদিনের মতো ইংরেজবাজারের পার্টি অফিসে গেছিলেন দুলাল সরকার। সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে নিজের অল্টো গাড়িতে চড়ে মহানন্দা পল্লিতে নিজের কারখানায় যাচ্ছিলেন তৃণমূল নেতা। গাড়িতে পিছনের বাঁ দিকের আসনে বসেছিলেন দুলাল। পাইপ ফ্যাক্টরির মোড় ঘুুরে গাড়ি থেকে নামেন তৃণমূল নেতা। ডানদিকে তাঁর কারখানা। রাস্তার উল্টোদিকে টোটোর শোরুম। দুষ্কৃতীরা তাড়া করতেই, সেই টোটোর শোরুমে ঢুকে যান তৃণমূল নেতা। সেখানেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালিয়ে তাঁকে খুন করে দুষ্কৃতীরা।

মালদার নিহত তৃণমূল নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গত পরশু দলীয় কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল কর্মী, সমর্থকরা দলের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারকে প্রশ্ন করেন, দুলাল সরকার খুনের তদন্তে এত দেরি হচ্ছে কেন ? অস্বস্তি ঢাকতে জয়প্রকাশ বলেন, এটা প্রশাসনিক বিষয়। দলের নির্দেশে নিহত নেতার পরিবারের সঙ্গে তাঁরা দেখা করতে এসেছেন। তার আগের দিন নিহত দুলাল সরকারের বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী চৈতালি সরকারের সঙ্গে দেখা করেন জয়প্রকাশ মজুমদার ও বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। দুলাল সরকারের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি মৌন মিছিলও করা হয়।